প্রকাশিত:
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৩
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের স্মৃতিময় দিন আজ, বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ১২ রবিউল আউয়াল। অত্যন্ত মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিনটি বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালিত হয়।
৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে সৌদি আরবের মক্কা নগরে বিখ্যাত কোরাইশ বংশে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।
তাঁর বাবা আবদুল্লাহ ও মা আমিনা। জন্মের আগেই রাসুল (সা.) তাঁর বাবাকে হারান এবং ছয় বছর বয়সে তিনি মাতৃহারা হন।
আরব জাহান যখন পৌত্তলিকতা ও অনাচারের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল, সেই আইয়ামে জাহেলিয়ার সময় মহান আল্লাহ সত্য, ন্যায়, কল্যাণ ও একত্ববাদ প্রতিষ্ঠায় তাঁর প্রিয় হাবিবকে অপার রহমত হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন। এ কারণে রাসুল (সা.)-কে সম্মান জানিয়ে রাহমাতুল্লিল আলামিন হিসেবেও সম্বোধন করেছেন মহান আল্লাহ।
বিনয়, সহিষ্ণুতা, দয়া, সহমর্মিতাসহ সব মানবিক সদগুণের সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটেছিল তাঁর মধ্যে। শ্রেষ্ঠ মানবিক গুণাবলির অধিকারী হিসেবে তিনি ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সর্বকালে সর্বজনস্বীকৃত। ন্যায়পরায়ণতা ও সত্যবাদিতার জন্য শৈশবেই তিনি ‘আল আমিন’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। সব নবী ও রাসুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মহানবী (সা.) ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত পান।
এরপর ২৩ বছর তিনি তৌহিদের বাণী প্রচার করেছেন। আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনে এবং সমাজে শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বেশি বেশি দরুদ পাঠ, কোরআন তিলাওয়াত, দান-খয়রাতসহ নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে দিনটি অতিবাহিত করেন। এ ছাড়া রাসুল (সা.)-এর জীবনী নিয়েও আলোচনার আয়োজন থাকবে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে এর উদ্বোধন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। এর আগে বাদ আসর মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিসৌধে পবিত্র কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল, ১৫ দিনব্যাপী ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, বাংলাদেশ বেতারের যৌথ প্রযোজনায় সেমিনার, ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবি খুতবা লিখন প্রতিযোগিতা, কিরাত মাহফিল, হামদ-নাত, স্বরচিত কবিতা পাঠ, ইসলামী ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী, মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলা, বিশেষ স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ। এ ছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫০টি ইসলামিক মিশন ও সাতটি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আজ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহকে মোবারকবাদ জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন: