প্রকাশিত:
৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৪০
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ মিলনায়তনে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ক্যাপিটাল মার্কেট ফর সাসটেইনেবল ফিন্যান্স’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, বহুমাত্রিকতা এসেছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি দেশে মানি মার্কেট এবং ক্যাপিটাল মার্কেট যদি একসঙ্গে কাজ করে এবং মানি মার্কেট যদি ফড়িয়ামুক্ত হয় তাহলে দেশের সমৃদ্ধি আরও বাড়বে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আজ পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে দেখুন, সেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকার কারণে পাকিস্তান কিছু দিন আগ পর্যন্ত দেউলিয়া হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকার কারণে সেখানে কীভাবে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মানব উন্নয়ন সূচক থেকে শুরু করে সামাজিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য সূচকসহ সব সূচকে আমরা ২০১৪-১৫ সালেই পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। এখানেই জননেত্রী শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার সার্থকতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেশ রচনার সার্থকতা। আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
দেশের অর্থনীতির দিকে দৃষ্টিপাত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের অর্থনীতির আকার গত প্রায় ১৫ বছরে কতগুণ বেড়েছে, সেটি অনেকের ধারণায় নেই। আমাদের অতীতের একশ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এখন প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে উন্নীত হয়েছে অর্থাৎ প্রায় পাঁচগুণ বেড়েছে। পাশাপাশি আমাদের বাজেট ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ৮৮ হাজার কোটি টাকা থেকে এখন ১২ গুণ বেড়ে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা হয়েছে। মাথাপিছু আয় ২০০৮ সালে ছিল ৬০০ ডলার, এখন ২ হাজার ৮৫৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
পরে সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমাদের দেশ কে পরিচালনা করবে, সেটি দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে এবং আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বিএনপি, তার মিত্ররা এবং কিছু দেশবিরোধী অপশক্তি আমাদের দেশের বিষয় শুধুমাত্র বিদেশিদের কাছে উপস্থাপন করে আসছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের নাক গলানোর সুযোগ করে দিয়েছে এবং বিদেশিদের কাছে বারে-বারে গিয়ে আমাদের দেশকে ছোট করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন, ভারতে জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কীভাবে বিশ্বনেতাদের আলোচনা হয়েছে, শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সে দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। এটিই প্রমাণ করে আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ কিছু অপশক্তি বিদেশিদের দিয়ে বাংলাদেশের ওপর নাক গলানোর জন্য যে অপচেষ্টা চালিয়েছিল, সেটির পরিপ্রেক্ষিতেই আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সবার সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলেছেন। আমাদের সঙ্গে দিল্লি, ওয়াশিংটন, ব্রাসেলসসহ সবারই সুসম্পর্ক। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দেশের সঙ্গে কোনো কোনো দেশের সুসম্পর্ক যাতে বিনষ্ট হয়, সে জন্য অনেক অপচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দেশে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণে ব্যাপক অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন হবে।
মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মো. সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।
মন্তব্য করুন: