প্রকাশিত:
৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৯:২০
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখানোর পাশাপাশি তাদের প্রযুক্তিতেও দক্ষ করে গড়তে কাজ করছি।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন নতুন অনেক কিছু শেখার সুযোগ পাচ্ছে।
এর মাধ্যমে তারা শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন মূল্যবোধ শেখার সুযোগ পাবে। আমরা আশা করছি, এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে।
বুধবার (০৮ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন অ্যাপ ‘নৈপুণ্যে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য দেন।
নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও মূল্যায়ন করা হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অনেক বাধা এসেছে। আমরা সেসব বাধাকে অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাব। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মূল্যায়নভিত্তিক শিক্ষায় জোর দেওয়া হচ্ছে। এখন সবাই পরীক্ষা নির্ভরতা থেকে বের হয়ে এ ধারায় আসছে, আমাদেরও তাই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে আমাদের শিক্ষার্থীরা জীবন থেকে শিখছে, ক্লাসরুম থেকে শিখছে। আমরা তাদের আশেপাশের সব কিছু থেকে শেখার সুযোগ করে দিয়েছি, এতে তারা সমাজের সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারবে। সমাজের সবার কাছ থেকে শেখার এ সুযোগের ফলে সবার প্রতি তাদের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে এবং তারা মূল্যবোধ সম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে রূপান্তর ঘটানো হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাস্তবভিত্তিক যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং তারা বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে, যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নভিত্তিক অ্যাপ নৈপুণ্যের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের ফলাফল, সংশ্লিষ্ট যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে এতে ঢুকতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় সব তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবে।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচলিত শিক্ষা কাঠামোয় পরীক্ষা নির্ভরতা ছিল এবং এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফলাফল নির্ভরতা ছিল। এবারের নতুন শিক্ষাক্রমে ফলাফল নির্ভরতা রাখা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে আরও বেশি শিখতে পারবে। নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখানো হবে। ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা আরও বেশি বাস্তবমুখী হতে পারবে। এটি বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব দেশেই অনুসরণ করা হচ্ছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে আমাদের এ পরিবর্তনকে স্বীকার করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন হবে এবং আন্তর্জাতিকমানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করবে নতুন শিক্ষাক্রম। এখানে শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠদান করার মধ্যেই শিক্ষা আবদ্ধ থাকবে না বরং শিক্ষার্থীরা নিজেরা তা সঙ্গে সঙ্গে করে দেখাবে। বর্তমান শিক্ষাক্রমে প্রযুক্তি শিক্ষার পাশাপাশি মূল্যায়নও হবে ভিন্নভাবে।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। নতুন শিক্ষাক্রম তাদের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। সরকার আমাদের শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের উদ্যোগের পর থেকে আমরা পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। আমরা সক্ষমতা বাড়াতে না পারলে পিছিয়ে পড়ব। আমাদের মাতৃভাষায় দক্ষতা বাড়াতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অনেক অপ্রচার হয়েছে এবং হবে। আমাদের এসব নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
মন্তব্য করুন: