প্রকাশিত:
৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৩০
ঢাকায় সাম্প্রতিক কালে অন্তত ৫৫টি মামলায় বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৮৪৫ নেতা-কর্মীর কারাদণ্ড হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গত নভেম্বরেই ৩৩টি মামলায় অন্তত ৬১৫ জনের সাজা হয়।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোয় সাজা হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে। এসব মামলার বেশির ভাগ ২০১৩ ও ২০১৮ সালে করা।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র ও আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার আদালতে আগস্ট মাসে ৩টি, অক্টোবরে ৬টি, নভেম্বরে ৩৩টি এবং ডিসেম্বরের প্রথম ৭ দিনে ১৩টি মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাজার তথ্য পাওয়া যায়। সেপ্টেম্বরে কোনো মামলায় সাজার খবর পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, এটা শুধু তথ্য পাওয়া মামলার হিসাব।
কোনো মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারাদণ্ড হয়েছে ছয় মাস করে। কোনো মামলায় হয়েছে সাত বছর পর্যন্ত। তবে বেশির ভাগ মামলায় কারাদণ্ড হয়েছে দুই থেকে তিন বছর করে।
সাজাপ্রাপ্ত ৮৪৫ সংখ্যাটি একক ব্যক্তি নয়। এক ব্যক্তির একাধিক মামলায় সাজার ঘটনাও রয়েছে। আইনজীবীরা বলছেন, বিএনপির ১০ জনের মতো নেতা-কর্মী একাধিক মামলায় সাজা পেয়েছেন। আবার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালতের রায়ে তিন শতাধিক আসামি খালাসও পেয়েছেন।
মামলার এজাহারসহ অন্যান্য নথিপত্র বলছে, নিষ্পত্তি হওয়া বেশির ভাগ মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বেআইনি সমাবেশ, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও হামলা, যানবাহন ভাঙচুর, আগুন দেওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
কোনো মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারাদণ্ড হয়েছে ছয় মাস করে। কোনো মামলায় হয়েছে সাত বছর পর্যন্ত। তবে বেশির ভাগ মামলায় কারাদণ্ড হয়েছে দুই থেকে তিন বছর করে। আইনজীবীরা বলছেন, দণ্ড পাওয়া বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী মামলা চলাকালে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তবে রায় ঘোষণার দিন তাঁদের বেশির ভাগ উপস্থিত ছিলেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মামলাজট কমাতেই রাষ্ট্রপক্ষ থেকে পুরোনো মামলা নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে বিএনপি কোনো লক্ষ্যবস্তু নয়।
মামলাজট কমাতেই রাষ্ট্রপক্ষ থেকে পুরোনো মামলা নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে বিএনপি কোনো লক্ষ্যবস্তু নয়।
আনিসুল হক, আইনমন্ত্রী
দেশে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপি এবারের নির্বাচন বর্জন করেছে। গত ২৮ অক্টোবর দলটি ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছিল। সেদিন সংঘর্ষের পর পুলিশের অভিযানে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। এরপর পুলিশ দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেককে গ্রেপ্তার করে। অনেকে আত্মগোপনে চলে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় সহিংসতার অভিযোগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৫৩টি মামলা হয়। পরে আর কটি মামলা হয়েছে, সেই হিসাব দেয়নি পুলিশ।
অন্যদিকে ঢাকার আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র ও ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত (এর মধ্যে ২, ৩, ৪ ও ৭ ডিসেম্বরের তথ্য পাওয়া যায়নি) সারা দেশে বিএনপির অন্তত ৯ হাজার ৯৩৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপির দাবি, ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ঘিরে এবং এরপর গ্রেপ্তার হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী।
আগেও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপির মাঠের রাজনীতিতে যাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন, তেমন নেতা-কর্মীদের সাজা হচ্ছে। সরকারের উদ্দেশ্য, বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজনীতি থেকে বিতাড়ন করা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকে বিএনপি দফায় দফায় হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি ডাকছে। তবে সরকার নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাই শেষ। অন্যদিকে একের পর এক মামলা, গ্রেপ্তার ও সাজার মধ্যে বিএনপি সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মতো জেলা পর্যায়েও তাদের বেশির ভাগ কার্যালয় বন্ধ। নেতা-কর্মীরা বাড়িতে থাকেন না।
বিএনপির নেতাদের ভাষ্য, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতেই সরকার মামলা ও গ্রেপ্তারের পথ বেছে নিয়েছে। ভোটের আগে পুরোনো মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগেও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপির মাঠের রাজনীতিতে যাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন, তেমন নেতা-কর্মীদের সাজা হচ্ছে। সরকারের উদ্দেশ্য, বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজনীতি থেকে বিতাড়ন করা। তিনি বলেন, আদালতের কাছ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না।
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, কোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ নির্বিচার সরকারবিরোধীদের আসামি করেছে। তখন সারা দেশে দায়ের হওয়া বেশ কিছু মামলার ঘটনাকে ‘গায়েবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের এখন যেসব মামলায় সাজা হচ্ছে, তা পুরোনো। মূলত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের এবং ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগের। এর বাইরে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার মধ্যে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের মামলাও রয়েছে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় নাশকতার মামলা হয়েছিল অন্তত ৫৭৮টি। প্রায় সব মামলার বাদী পুলিশ। তখন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, কোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ নির্বিচার সরকারবিরোধীদের আসামি করেছে। তখন সারা দেশে দায়ের হওয়া বেশ কিছু মামলার ঘটনাকে ‘গায়েবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি।
রাজধানীতে আগস্ট থেকে নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলোর বেশির ভাগের রায় হয়েছে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালত ও ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতেও কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তি হয়।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করা আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত আগস্টের শুরু থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়ার গতি অনেক গুণ বেড়ে যায়। সেটি এখনো অব্যাহত রয়েছে।
আইনজীবীরা আরও বলছেন, বেশির ভাগ মামলায় সাক্ষী নেওয়া হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা পাবলিক সাক্ষীদের (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারি সংস্থার সদস্য বাদে অন্য সাক্ষী) সাক্ষ্য নেওয়ার সংখ্যা কম। বেশির ভাগ মামলার বাদী পুলিশ।
বিএনপির নেতা–কর্মীদের আরেক আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, অধিকাংশ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ পুলিশ সাক্ষীদের আদালতে হাজির করছে। পুলিশ সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে বেশির ভাগ মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাজা হচ্ছে।
অবশ্য রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, শুধু পুলিশ সাক্ষী নয়, পাবলিক সাক্ষীদেরও আদালতে হাজির করা হচ্ছে। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু বলেন, পুরোনো মামলা নিষ্পত্তির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে সাক্ষী হাজির করছে। পুলিশ সাক্ষীসহ অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে যাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হচ্ছে, আদালত তাঁদের কারাদণ্ড দিচ্ছেন। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে না, আদালত তাঁদের খালাস দিচ্ছেন। রায়ে সংক্ষুব্ধ যেকোনো ব্যক্তি উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারেন।
অন্যদিকে ঢাকার সিএমএম আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) শহীদ উদ্দিন বলেন, আদালত থেকে পাবলিক সাক্ষীসহ অন্য সাক্ষীদের হাজির হওয়ার জন্য সমন দেওয়া হয়। অনেক সময় পাবলিক সাক্ষীদের খুঁজে পাওয়া যায় না, যে কারণে তাঁদের আদালতে হাজির করা যায় না। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অনেক মামলায় পাবলিক সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন, বিএনপির রাজনীতিতে যাঁরা সক্রিয়, তাঁদের সাজা হওয়ার ঘটনা বেশি। তালিকায় যেমন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা।
দণ্ড পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবীবুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, বর্তমান সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনামুল হক, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর।
এ ছাড়া ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া, রাজীব আহসান ও হাবিবুর রশীদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ রয়েছেন দণ্ডপ্রাপ্তদের তালিকায়।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিএনপি রাজধানীকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। তারা ঢাকায় আন্দোলন জোরদার করতে চায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ঢাকায় দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে দণ্ডিত ও বেশির ভাগ আত্মগোপনে।
মামলার নথিপত্র ও বিএনপির নেতাদের আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার ৫০টি থানা এলাকার মধ্যে ৩০টিতে সাম্প্রতিক কালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দণ্ড হয়েছে। ঢাকা মহানগরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে মিরপুর থানার, ১০টি।
রাজধানীর পল্টন, বনানী, কোতোয়ালি, শাহজাহানপুর, দক্ষিণখান, ভাটারা, তেজগাঁও, বংশাল, সূত্রাপুর, সবুজবাগ, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, ভাষানটেক, উত্তরা পশ্চিম, কামরাঙ্গীরচর, কদমতলী, কলাবাগান, রমনা, বাড্ডা, মুগদা, মোহাম্মদপুর, গেন্ডারিয়া, উত্তরখান, দক্ষিণখান, শাহ আলী, চকবাজার, দারুসসালাম, কাফরুল ও শ্যামপুর থানার বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপির নেতা-কর্মীর সাজা হয়েছে।
বিএনপির নেতাদের আইনজীবীদের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে আরও বেশ কিছু মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। যে গতিতে বিচার চলমান, তাতে দু-এক মাসের মধ্যে আরও মামলা নিষ্পত্তির পর্যায়ে আসতে পারে।
দণ্ডিত নেতা–কর্মীদের আইনজীবীরা বলছেন, সাজা হওয়া নেতা-কর্মীদের সামনে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া হলো আত্মসমর্পণ করে দণ্ড বাতিল চেয়ে আপিল করা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখনো জামিন পাননি। আইনজীবীদের দাবি, বিএনপির মহাসচিবের বিরুদ্ধে অন্তত ১০২টি মামলা হয়। ২৮ অক্টোবরের অন্তত চারটি মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলায় তাঁর জামিন নিম্ন আদালতে নাকচ হয়েছে। কেন তাঁকে জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মামলায় আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হন। এখন দেখা যাচ্ছে, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা প্রায় সব মামলায় দোষী প্রমাণিত হচ্ছেন (সব আসামির সাজা না হলেও)। মামলার যে গতি ও দোষী প্রমাণিত হওয়ার প্রবণতা, তা স্বাভাবিক অবস্থার সঙ্গে মেলে না। এ থেকে মানুষের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে যে ন্যায়বিচার পাওয়া যাচ্ছে না।
মানুষের এ ধারণা দেশের ভবিষ্যতের জন্য খুবই আশঙ্কাজনক বলে মনে করেন শাহদীন মালিক। তিনি আরও বলেন, বিচারব্যবস্থার ওপর যদি মানুষের আস্থা কমে যায়, তাহলে অন্য প্রতিষ্ঠানের ওপরও আস্থা থাকবে না। সেটা দেশে অরাজকতা তৈরি করতে পারে।
মন্তব্য করুন: