রবিবার, ২৫শে মে ২০২৫, ১০ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • বৈঠকের পর উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি
  • প্রতিবন্ধকতা কাটিয়েই অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে
  • ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
  • সারা দেশে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস
  • প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে থাকছেন
  • সারাদেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার আরও ১৭৪৪
  • জুলাই ঘোষণাপত্র-বিচার-সংস্কার-নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে চায় এনসিপি
  • একনেক সভা শেষে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা
  • সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

বাগেরহাটে আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার পর উল্লাস করেন খুনিরা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
১৮ জুন ২০২৩, ১৭:৫০

নিহত আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল ইসলাম

বাগেরহাট সদর উপজেলার বৈটপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মো. আনারুল ইসলাম ওরফে আনা (৫০) পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার আগে সন্ত্রাসীরা রামদা, হকিস্টিক, লোহার রডসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে বাগেরহাট শহরে মহড়া দেন। পরে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যার পর তাঁরা সেখানে উল্লাস করেন।

 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

আনারুল ইসলাম বাগেরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি বাগেরহাট পৌর শহরের পূর্ব বাসাবাটি এলাকায়। ১৭জুন শনিবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার বৈটপুর এলাকার চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের সামনে তাঁর ওপর হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

 

 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, হামলার আগে শহর থেকে চারটি মোটরসাইকেলে যুবলীগ নেতা সোহেল হাওলাদার ওরফে কালা সোহেলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে রামদা, হকিস্টিক, লোহার রডসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দড়াটানা সেতু পার হয়ে নদীর ওপারে চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের সামনে যান। হামলার আগে ও পরে শহরের মধ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার প্রকাশ্যে মহড়া দেন তাঁরা। দড়াটানা সেতু দিয়ে যাওয়ার সময়ও অনেকে তাদের দেখেন। প্রকাশ্যেই ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে মারপিট করা হয়। মারধরের পর তাঁকে সেখানে ফেলে উল্লাস করেন তাঁরা।

 

অভিযুক্ত সোহেল হাওলাদার জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েকজনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তিনি বাগেরহাট পৌর যুবলীগের ১ নম্বর সদস্য। বাগেরহাট সদর উপজেলার নাগেরবাজার এলাকার রশীদ হাওলাদারের ছেলে তিনি। ঘটনার পর তিনি আত্মগোপন করেছেন। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে কল করেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

 

 

নিহত আওয়ামী লীগ নেতা তাঁর ছোট ভাইয়ের মাছের ঘের-সংক্রান্ত ঝামেলা মেটাতে গিয়ে খুন হন বলে দাবি করেছেন স্বজনেরা। নিহত ব্যক্তির ছেলে জিসান শেখের দাবি, ‘আমার বাবার সঙ্গে কারও কোনো ঝামেলা ছিল না। তিনি বাড়ির সামনে ছোট একটি মুদিদোকান চালাতেন। ছোট চাচা ঘেরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝামেলায় পড়েছেন শুনে তিনি সেখানে যান। ভাইয়ের ঝামেলা মেটাতে গিয়ে আমার বাবা খুন হন।’

 

নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই বাচ্চু শেখ বলেন, ‘আমার মেজভাইকে ওরা শুধু শুধু মেরে ফেলল। কারও সঙ্গে তাঁর বিরোধ নেই। ঘের নিয়ে আমার সঙ্গে বিরোধ ছিল কালা সোহেলের। ১৫ দিন আগে কালা সোহেল আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা চান। ওই চাঁদার টাকা না দিয়ে মাছ ধরতে যাওয়ায় তাঁরা হামলা করেন। সেখানে আমার ২০ বিঘার একটি ঘের আছে।’ স্থানীয় খালে মাছ ধরা-সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই ঘেরও আমরা করি। মূলত চাঁদা না দেওয়ায় এই হামলা।’

 

ঘটনাস্থল বৈটপুর এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের পেছনের একটি সরকারি খালের দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের বিরোধ চলছিল। সুরালী খাল আটকে অনেক বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছিল একটি পক্ষ। ২০১৫ সালে পৌর নির্বাচনের পর ওই পক্ষের কাছ থেকে খালটির দখল নেয় অন্য পক্ষ। দুই বছর আগে আবার খালটির একটি অংশ দখলে নেয় আগের পক্ষ। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। হামলাকারী ও হামলার শিকার দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

 

বাগেরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুম শেখ বলেন, যাঁরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাঁদের সবার নামই পুলিশ পেয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

 

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী মাফুজা বেগম বাদী হয়ে মামলা করবেন।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর