প্রকাশিত:
২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:১৭
রাজধানীর বাজারগুলোতে বেশ কয়েক দিন ধরেই ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। শুরুতে কয়েকটি বাজারে বিক্রি করা হলেও এখন রাজধানীর প্রায় সবকটি বাজারেই গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরুর মাংসের দাম বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে কেজি ৮০০ টাকায় উঠে যায়। আকাশচুম্বী দামের কারণে নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা গরুর মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছিলেন।
এতে গরুর মাংসের চাহিদা অনেক কমে গিয়েছিল। এখন ক্রেতার আকর্ষণে লাভ কমিয়ে মাংস বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এতে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষেরা এখন গরুর মাংসের দোকানে ভিড় করছেন। ফলে তাদের বিক্রিও আগের তুলনায় বেড়েছে।
সম্প্রতি মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিত বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান ব্যবসায়ী নেতারা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ গোলাম মোর্তজা মন্টু। তিনি বলেন, প্রতি মাসে গরু কেনাকাটার ওপর নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হবে। একমাস পর আবার বসে দাম পুনরায় নির্ধারণ করা হবে।
(২২ ডিসেম্বর) শুক্রবার ও (২৩ ডিসেম্বর) শনিবার শুক্রাবাদ, মালিবাগ, বাড্ডা, মগবাজার ও রামপুরা বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। যদিও গত ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও তারা ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করতেন বলেও ব্যবসায়ীরা জানান।
শুক্রাবাদ বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আগের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা কমেছে। এতে আমাদের বিক্রিও আগের তুলনায় বেড়েছে।
বাড্ডার কাঁচাবাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, গরুর মাংস কেজি ৬৫০ টাকায় বিক্রি করার কারণে আমাদের লাভ কমে গেছে।
তবে দাম কমার কারণে মানুষ বেশি খাচ্ছে। বিক্রিও বেড়েছে।
মাংসের দাম কমায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। বাড্ডার বাজারে কথা হয় এই এলাকার বাসিন্দা রিয়াজুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক থেকে দেড় মাস আগেও গরুর মাংস কিনতে হয়েছে কেজি ৭৫০ টাকায়। যার কারণে মাসে একবারের বেশি কেনা হতো না। এখন দাম কিছুটা কমার কারণে মাসে দুইবার খেতে পারছি। তবে গরুর মাংস আরো কমে কেজি ৬০০ টাকায় আসার দরকার।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে মাংসের উৎপাদন ছিল ৮৭ লাখ টন। ওই বছর দেশের বাজারে মাংসের চাহিদা ছিল ৭৬ লাখ টন। ফলে চাহিদার তুলনায় ১১ লাখ টন বেশি মাংস উৎপাদিত হয়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়া সত্ত্বেও বাজারে দাম ছিল বেশি। কিন্তু মানুষ মাংস কেনা কমিয়ে দেওয়ায় দামও কমতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, আগামী একমাস শর্তসহ ৬৫০ টাকা করে গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা একমাস পর চষ্টো করব যেন এটিকে কমিয়ে ৬০০ টাকা করা যায়।
মন্তব্য করুন: