বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • শেখ হাসিনা ও টিউলিপকে দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু
  • মাঠ পর্যায়ে অনিয়ম পেলে কোম্পানির অ্যাগ্রিমেন্ট বাতিল
  • বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ জন সেনাসদস্য নেবে কাতার
  • বেনজীরের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারি
  • ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ১৬২০ মামলা
  • বিশ্বকে ৫ উদ্যোগ নিতে ড. ইউনূসের আহ্বান
  • ফিলিস্তিনের মানবিক দুর্ভোগ শুধু একটি অঞ্চলের নয়, মানবতার বিষয়
  • ইশরাকের গেজেট প্রকাশ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়ে ইসির চিঠি
  • প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা মেনেই বৈঠক করা হচ্ছে
  • ‘ডিবিতে থাকা সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি আগুনে পুড়ে গেছে’

স্বপদে বহাল রাখলেন সাধারণ সম্পাদক

আওয়ামী লীগ নেতাকে সভাপতির অব্যাহতি

হারুনূর রশিদ ,নরসিংদী

প্রকাশিত:
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-১ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মতবিনিময় সভায় বক্তব্যে ‘নৌকাওয়ালারা পালানোর জন্য জায়গা পাবে না’ বলা মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলামকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠির মাধ্যমে সিরাজুল ইসলামকে অব্যাহতি ও বহাল করা হয়।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর)  রাতভর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অব্যাহতি দিয়ে লিখিত চিঠির দেয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই স্বপদে বহাল করার চিঠি দেন সাধারণ সম্পাদক এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে।


জানা যায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামীলীগ নৌকার প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম হীরু’র পক্ষে কাজ করলেও সাধারণ সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল এর পক্ষে কাজ করছেন।জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম হিরু’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামানের সভায় সিরাজুল ইসলাম হুমকী প্রদান করেন যে, ’নৌকাওয়ালারা পালানোর জন্য জায়গা পাবে না’ যা মিডিয়ায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়। যা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এমন অবস্থায় তাকে সাংগঠনিক বিরোধী কার্যক্রমের কারণে মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। আর স্থায়ী বহিস্কার কেন করা হবে না আগামী ৭ দিনের মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য বলা হয়।


এর কয়েক ঘন্টা পরই সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত আরেক চিঠিতে জানানো হয়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগীতা মূলক করার লক্ষ্যে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ও সমর্থনের বিষয়ে দলীয় ভাবে কোন বিধি নিষেধ নেই। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি বিধায় সকল নেতাকর্মীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও সমর্থন তাদের নিজস্ব অধিকার। এবিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে না বিধায় সিরাজুল ইসলামকে অব্যাহতি প্রদানের সিদ্ধান্ত সভাপতির একক ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত যা গ্রহণযোগ্য বা কার্যকর নয়। আপনি স্ব-পদে বহাল আছেন।

এব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেন বলেন, সাধারণ সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে কাজ করছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ হয়ে কথা বলছেন। সিরাজুল ইসলামের বক্তব্য নৌকার হুমকি, নেত্রীর হুমকি ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের জন্য হুমকি এজন্য তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলী বলেন, একক ভাবে কোন মিটিং না ডেকে কাউকে অব্যাহতি দেয়া সভাপতির অধিকারে নেই। তিনি আমার সাথে কোন পরামর্শ করেনি আর কোন মিটিং ও ডাকেনি। তিনি একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে অব্যাহতি দিয়ে পারেন না। নেত্রী এবার নির্বাচন সফল করার লক্ষ্যে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের প্রার্থী হওয়ার ও তাদের সাথে নেতাকর্মীদের কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। নেত্রীর সিদ্ধান্ত ছাড়া আমরা কাউকে অব্যাহতি দিতে পারিনা।


উলেখ্য, গত বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মাধবদী পৌরসভা মিলনায়তনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুজ্জামান কামরুলের মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে সদর আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরুর (বীর প্রতিক) লোকজনকে উদ্দেশ্য করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা যখন জানবেন মাধবদীর মেয়র মোশারফ হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ভাইয়ের জন্য নামছেন, তখন কেউ বাঁধা দিয়ে রাখতে পারবেন না। কাল থেকে নৌকাওয়ালারা পলাইবার জন্য জায়গা পাবে না।’ এই বক্তব্য শুনে উপস্থিত লোকজন হাসাহাসি শুরু করলে তিনি নিজের বক্তব্য সংশোধন করে বলেন, নৌকা বলিনা আমরা হীরুর নৌকা বলি, হীরু..। হীরুর লোকেরা পলাইবার জায়গা ইনশাল্লাহ পাবেনা। ৭ তারিখে যে জাগরণ সৃষ্টি হবে এই নরসিংদীতে এই জাগরণের পরিণতিতে কামরুল ভাই (স্বতন্ত্র প্রার্থী) বিপুল ভোটে জয়ী হবে।

 

মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলামের এমন হুমকিমূলক বক্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে শুরু হয় পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা। এর ভিডিও চিত্র জাতীয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যার পরিপ্রেক্ষিতে জনৈক মালিক মোহাম্মদ রাজিব নামে এক ব্যক্তি রিটার্নিং অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংসদীয় আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আসমা সুলতানা নাসরীন মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেন। নোটিশে এই বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাঁকে হাজির হয়ে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর