প্রকাশিত:
২ জানুয়ারী ২০২৪, ১৪:৫৭
গাজীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন সবুজের নির্বাচনী ক্যাম্পের পাশের একটি ইলেকট্রনিক্স দোকানে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তার দুইজন সমর্থক আহত হয়েছেন। সোমবার (১ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া সলিং মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক মাওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও চকপাড়া গ্রামের বেলাল উদ্দিনের ছেলে সাজেদুল ইসলাম সুরুজ (৩৮) ও চকপাড়া গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম (৫৫) ।
মাওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা চারজন নির্বাচন পরিচালনা অফিসের পাশে টিভি ফ্রিজের শো-রুমে বসে নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। এমন সময় ফুলবাড়ীয়া থেকে মাওনা অভিমুখী মোটরসাইকেলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে গুলি ফুটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুলিতে শো রুমের গ্লাস ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছে গুলির খোসা ও একটি বুলেট।
আহত সাজেদুল ইসলাম জানান, গাজীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান এমপি ইকবাল হোসেন সবুজের কর্মী-সমর্থকরা তাদের নির্বাচনী অফিসের পাশে মীম ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ফার্নিচার গ্যালারি নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গুলি চালায়। গুলি ইলেকট্রনিক্স দোকানের থাই গ্লাসে লাগে। আর গুলির আঘাতে ভেঙে যাওয়া কাঁচের টুকরোর আঘাতে তিনি এবং নুরুল ইসলাম আহত হন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী শফিকুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনায় বলেন, মুহাম্মদ ইকবাল হোসেনের নির্বাচনী কার্যালয়ের পাশেই তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রাত নয়টার দিকে চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সাত থেকে আট জন ব্যক্তি নৌকার মিছিল করতে করতে এসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এ সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে সাজেদুল ইসলাম ওরফে সুরুজ, মজিবুর রহমান, মাযহারুল ইসলাম ও নুরুল ইসলাম অবস্থান করছিলেন। তারা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী। গুলিতে ভাঙা কাচের টুকরোর আঘাতে ভেতরে থাকা চারজনের মধ্যে দুজন আহত হন।
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, সম্প্রতি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে অবস্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে নৌকার প্রার্থীর লোকজন হামলা করেছিল। ওই ঘটনায় তার দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা হামলার ফুটেজ তিনি সরবরাহ করেছিলেন। এতে তার উপর ক্ষুব্ধ ছিল হামলাকারীরা। সেই ক্ষোভ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে ।
ঘটনার পর শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, শ্রীপুর থানার পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, রাতে ওই নির্বাচনী ক্যাম্প পরিদর্শন করার কথা ছিল তার। দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি ছুঁড়েছে। ইতিপূর্বেই একটি পক্ষ আমার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর চালিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমি মনে করি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আমার দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ অস্ত্র, অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা।
গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল মো. আজমীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার ওসিসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন: