নেত্রকোণার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেহাবি) গাড়ি চালক পদে চাকরি দেওয়ার নামে পাঁচ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
চাকরি না হওয়ায় ভুক্তভোগী টাকা ফেরত চাইলে নানা তালবাহানা করেন ওই শিক্ষক। এক পর্যায়ে টাকা ফেরত পাওয়ার পাশাপাশি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আল আমিন।
অভিযুক্তের নাম এস এম সাজ্জাদুল হক সবুজ। তিনি বারহাট্টা উপজেলার আশিয়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। আর ভুক্তভোগী আল -আমিন বারহাট্টা উপজেলার বিক্রমশ্রী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। বৃহস্পতিবার অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন বারহাট্টা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম। এরআগে গত ২৭ ডিসেম্বর থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন আল আমিন।
থানায় অভিযোগ ও আল আমিনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক সাজ্জাদুল হক ও আল আমিন একেঅপরের পরিচিত। প্রায়ই খোঁজ খবর নিয়ে আল আমিনকে চাকরির জন্য আবেদন করতে বলতেন সাজ্জাদুল হক। তাঁর কথা মতো শেহাবিতে গাড়ি চালক পদে আবেদন করেন আল আমিন। চাকরি পাইয়ে দিতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুষ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন সাজ্জাদুল হক। চাকরি না হলে টাকা ফেরত দিবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি। সেই ভরসায় গত জুনে আল আমিন পাঁচ লাখ টাকা স্থানীয় কয়েক জনের উপস্থিতিতে সাজ্জাদুলের হাতে তুলে দেন। কিন্তু চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন তাল-বাহানা করে সময় ক্ষেপন করেন সাজ্জাদুল। পরে কল দিলেও আর রিসিভ করেন না। এক পর্যায়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা শুরু করেন সাজ্জাদুল। শেষে বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ দেন আল আমিন।
ভুক্তভোগী আল আমিন বলেন, চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে পাঁচ লাখ টাকা নেন সাজাদুল হক। এলাকার অনেকের সামনে দিয়েছি টাকা। চাকরি না হলে টাকা ফেরত দিবেন বলেছিলেন। এখন চাকরিও হয়নি, টাকাও দিচ্ছেন না তিনি। থানায় অভিযোগ দেওয়ায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন সাজ্জাদুল হক।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক এস. এম. সাজ্জাদুল হক (সবুজ) অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি জানা নেই। বারহাট্টা থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। শিক্ষক সাজ্জাদুল হককে অভিযোগের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তবে তিনি অসুস্থ থাকায় আসেননি। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য- গত ৬ ডিসেম্বর নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনের ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থীর সভায় ভোট চান শিক্ষক সাজ্জাদুল হক। বক্তব্যর ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদ পারভেজ। পরে এ ঘটনায় তা্কে শোকজ করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
এরআগে শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে বরখাস্ত হয়েছিলেন শিক্ষক সাজ্জাদুল হক।
মন্তব্য করুন: