প্রকাশিত:
২২ জানুয়ারী ২০২৪, ১৬:৪৭
কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে গ্রামীণ সংস্কৃতি সাদরে গ্রহণ করার প্রয়াসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) তিন দিনব্যাপী ‘কুহেলিকা আগমন-১৪৩০’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য’র উদ্যোগে সোমবার (২২ জানুয়ারি) ক্যাম্পাসের বটতলায় শুরু হয়। উৎসবটি শেষ হবে আগামী বুধবার (২৪ জানুয়ারি)।
এসময় কুহেলিকা উৎসবটি উদ্বোধন করেন আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং অভয়ারণ্যের উপদেষ্টা ড. মো: শাহজাহান মন্ডল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আল ফিকহ অ্যান্ড লিগাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: আমজাদ হোসেন ও আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রশাসক ড. মো: আনিচুর রহমান।
এ উৎসবে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন গ্রামীণ সংস্কৃতি তুলে ধরেছে আয়োজকরা। মূলত শীতের কুয়াশায় আবৃত ক্যাস্পাসকে বরণ করে নিতেই এই আয়োজন। শিক্ষার্থীদেরকে আকৃষ্ট করছে ইউনিক আয়োজন পোস্টমাস্টার চরিত্রে প্রিয় মানুষের কাছে চিঠি পাঠানো।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের বটতলায় বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ৩২টি স্টল স্থাপন করা হয়েছে। উৎসবস্থলে খাইলেই পটবে, জিভে জলে, হৈ চৈ হোটেল, বুক ভিলেজ, বই তরুণী, আগে এদিকে আসুন, পৌষের বাহারি আহার, চিঠিবক্স, মুখরোচক, দ্যা ফ্লাওয়ারসহ বিভিন্ন ধরণের স্টল সাজানো হয়েছে। প্রাচীন বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্টলগুলোয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সন্ধ্যার পর রঞ্জনের পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলিক গান, নাচ, কবিতাসহ বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হচ্ছেন এই উৎসব।
‘কুহেলিকা আগমন’ উপলক্ষে আনন্দ উৎসবে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো বটতলা এলাকা। ক্লাস, পরীক্ষা, আস্যাইনমেন্টের ফাঁকে এমন আয়োজন পেয়ে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
গণিত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জান্নাত মিম নামক এক শিক্ষার্থী অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, এই কুহেলিকা উৎসবের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। সংস্কৃতিমনা থেকে শুরু করে বইপ্রেমিদের জন্য যেন শিক্ষার্থীবান্ধব। এই ধরনের উৎসব অব্যাহত থাকলে ক্যাম্পাসের সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে।
ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের হাসিব আব্দুল্লাহ ব্যক্ত করেন, আমি এই ক্যাম্পাসে প্রথম বারের মতো কুহেলিকা উৎসব পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত, বৈচিত্র্যময় স্টল, শিক্ষার্থীদের সমাগম এবং উৎসবমুখর পরিবেশে আমি হারিয়ে গেছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি অভয়ারণ্যকে যারা আমাদেরকে এরকম একটা উৎসব উপহার দিয়েছে।
এ বিষয়ে অভয়ারণ্যের সাধারণ সম্পাদক হাশিন অর্প বলেন, এই উৎসবে স্থান পেয়েছে গহনা, ফুসকা, পানি পুরী, কাঠের গহনা এবং বই স্টল ইত্যাদি। এই কুহেলিকা উৎসব ক্যাম্পাসের উদ্যাক্তাদের জন্য মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কার্যক্রমের দিক থেকে আমাদের কোনো সীমানা নেই। সামাজিক সংস্কৃতিতে বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে রঞ্জন-১ যেখানে মৌলিক গান, কবিতা, নাচ ইত্যাদি থাকবে। এই যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলিক প্রচারণা যেটা পুরো বাংলাদেশে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
সংগঠনটির ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, অভয়ারণ্যে ১৫ জন কার্যনির্বাহী সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবী সদস্য প্রায় ২৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী কাজ করতেছে। আমরা কখনও চাইনি যে এই সংগঠন জনপ্রিয় হোক, পশুপাখি কিংবা মানুষ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিতে জড়িত হোক সেটা কামনা করি।
সংগঠনটির সভাপতি ইসতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, এই কুহেলিকা উৎসব সফল করার লক্ষ্যে অভয়ারণ্যের সদস্যদের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। এজন্য আমাদের আয়োজন সুন্দর এবং গুছানো হয়েছে বলে মনে করছি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি যায়গা যেখানে যে কেউ ভিন্নভাবে কিছু উপস্থাপন করলে সর্বোচ্চ সাড়া পাবে। আমাদের আজকে শুরু হয়ে আগামী তিনদিন এই আয়োজন চলমান থাকবে। আমাদের রঞ্জন-১ সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পোগ্রাম চলমান থাকবে।
মন্তব্য করুন: