প্রকাশিত:
৩০ জানুয়ারী ২০২৪, ১১:৩৫
পিঠা বাঙালির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যদ্রব্য। পিঠা-পুলির বাংলাদেশ এটি আমাদের দীর্ঘকালের পরিচয় বহন করে।
হাজার বছর ধরে বাঙালির উৎসব-পার্বণে পিঠা অনিবার্য উপাদান হিসেবে আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে। পিঠার নামে যেমন বৈচিত্র্য রয়েছে তেমনি স্বাদে-গন্ধেও রয়েছে বিশেষত্ব। ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার বাহারি পিঠা একসময় পাড়ায়, মহল্লায়, ছোট-বড় সবাই পিঠা খাওয়ার আনন্দে মেতে উঠতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে অনেক। নগরের এ ব্যস্তময় জীবনের গর্ভেও বাড়ির উঠানে পিঠা তৈরির সেই আমেজ হারিয়ে যাচ্ছে অনেকটা। তাই অঞ্চলভিত্তিক বিশেষায়িত ও লুপ্তপ্রায় পিঠা শিল্পকে তুলে আনার লক্ষ্যে সারা দেশব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসবের আয়োজন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
সংস্কৃতির এ অন্যতম অনুষঙ্গকে তুলে ধরতেই সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘মাছে ভাতে বাঙালি, ঐতিহ্যমণ্ডিত পিঠা-পুলি, রন্ধন আর পিঠার বাহারে শিল্পী আছে ঘরে ঘরে’ এ প্রতিপাদ্যে দেশের ৬৪ জেলায় জাতীয় পিঠা উৎসব-২০২৪ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আগামী বুধবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) পর্যন্ত এ আয়োজন চলবে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। একইসঙ্গে দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় একযোগে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এ পিঠা উৎসব।
উৎসবে বিভিন্ন জেলার প্রান্তিক পর্যায় থেকে অংশগ্রহণ করবেন পিঠাশিল্পীরা। এবার উৎসবে খানিকটা ভিন্নতা যোগ করা হয়েছে। যারা পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে পরিবারের জন্য পিঠা তৈরি করেন এবং লুপ্ত প্রায় পিঠাকে বংশ পরম্পরায় ধরে রেখেছেন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন দুজন করে শিল্পী পিঠা উৎসবে একটি স্টলে একদিন অংশগ্রহণ করবেন এবং মূল্যায়ন কমিটি পিঠার গুণমান, ভিন্নতা ও স্বাদ যাচাই করে নম্বর দেবেন। তার মাধ্যমেই প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় জন পুরস্কৃত হবেন। এবার পিঠা উৎসবে অংশ নেবে ৫০টির বেশি স্টল। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সনদ দেওয়া হবে। এ ছাড়া দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় একযোগে যে উৎসব হবে তাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় অঞ্চলভিত্তিক পিঠাশিল্পীরা অংশগ্রহণ করবেন।
৩১ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে থাকবেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান। প্রবন্ধ পাঠ করবেন লেখক ও গবেষক বাশার খান। স্বাগত বক্তব্য দেবেন একাডেমির সচিব (উপসচিব) সালাহউদ্দিন আহাম্মদ।
এ ছাড়া পিঠা উৎসবে প্রতিদিন বিকেল ৫টায় থাকবে লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
মন্তব্য করুন: