ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা ইলেকট্রনিক্স ডিজিটাল ডিভাইস সফটওয়ার, হার্ডওয়ার রপ্তানির একটা টার্গেট নির্ধারণ করেছি। আগামী পাঁচ বছরে আমরা পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নতি করতে চাই। আমাদের বৈদেশিক বিনিয়োগও আমরা এক বিলিয়ান ডলারে পরিণত করতে চাই, উন্নতি করতে চাই। এই মুহুর্তে সব মিলিয়ে হাইটেক পার্কে দেড় হাজার ছেলে-মেয়ে কাজ করছে।
তবে দেশের মধ্যে আমরা আইটি আইটিএস হার্ডওয়ার সেক্টরে সব মিলিয়ে এক মিলিয়ান অর্থাৎ ১০ লক্ষ তরুণ-তরুনীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই। সেখানে ভিসতা ইলেকট্রনিক্স একটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকার রাখবে।
তিনি বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ভিসতা ইলেকট্রনিক্সের নতুন কারখানা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরউল্লাহ এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন- ভিসতা ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড কারখানার চেয়ারম্যান সামছুল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন আকাশ ও পরিচালক, ঢাকা বিজনেস সম্পাদক উদয় হাকিম।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধামন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে এবং আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের দিক নির্দেশনায় প্রাইভেট সেক্টর এখানে বিনিয়োগ করেছে কয়েক বিলিয়ান ডলার। মানে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। আমাদের শুধু দেশের চাহিদা দেশে উৎপাদন করেই মেটানো নয়।
এখন পরবর্তী লক্ষ্য আমরা ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়ার মার্কেটে আমরা এক্সপোর্ট করতে চাই। আমার প্রত্যাশা থাকবে যেখানে আমাদের ভিসতা ইলেকট্রনিক্স তারা যে পন্যগুলো এখানে উৎপাদন করবে। ইতিমধ্যে আমি জেনে খুশি হয়েছি প্রায় ১০০ কোটি টাকা তাদের বিনিয়োগ হবে। হয়তো ৩ থেকে ৫ মাসের মধ্যে ৫ শতাধিক তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধামন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত¡াবধানে ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে সরকার। ইলেকট্রনিক্স ও আইসিটি ডিভাইস তৈরির মাধ্যমে ভিসতা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমি জানতে পেরেছি, দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে পণ্য রপ্তানি করবে।
৩৭০ একর জমিতে গড়ে ওঠা দেশের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ হাই-টেক পার্কও বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি।এই পার্কটিতে বর্তমানে ৮২টি প্রতিষ্ঠানের নামে জমি বরাদ্দ করা হয়েছে।২০২৫ সালের মধ্যে এখানে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত হুন্দাই কোম্পানি দেশের সর্বপ্রথম হাইব্রিড গাড়ি নির্মাণে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। অবকাঠামো,জমি স্পেস বাবদ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে প্রতিমাসে সরকারের৬০ থেকে ৭০লক্ষ টাকা ভাড়া বাবদ আয় হচ্ছে।আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক আরও জানান,নিকট ভবিষ্যতে ডাটা সেন্টার ভিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগে ৪০০০ কোটি টাকা অতিক্রম করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।এবং পুরোদমে হাই-টেক সিটি চালু হলে ৪০থেকে ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।তিনি বলেন,পর্যায়ক্রমে এখানে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, সিনেপ্লেক্স, শপিংমল,হোটেল,প্রশাসনিক এলাকা, সার্ভিস এলাকা, হাসপাতাল,মসজিদ,আবাসন, বৈদ্যুতিক গ্রিড সাবস্টেশন,স্কুল,লেক,আভ্যন্তরীণ রাস্তা,বিনোদন কেন্দ্র,পুকুর, বনায়ন,ই ওয়েস্ট প্লান্ট ইত্যাদি নির্মাণের প্রকল্প চলছে।এখানে ইতোমধ্যে নোকিয়া, শাওমি, সনি ব্র্যান্ড তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে।
তিনি বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির অবকাঠামোসহ অন্যান্য সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। ভিসতা ইলেকট্রনিক্সের নতুন কারখানা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তিনি বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করেন।
মন্তব্য করুন: