প্রকাশিত:
১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৭:০৯
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) হল ডাইনিং এর অপুষ্টিকর ও নিম্নমানের খাবারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক ভালো মানের খাবার সন্ধানে ছুটাছুটি করেন ক্যাম্পাসে অবস্থিত হোটেল এন্ড রেস্তোরাঁয় বা ক্যান্টিনে। তবে সেখানেও বিভিন্ন সময় দেখা মিলে ভিন্ন চিত্র। পাওয়া যায় পোকামাকড় ও অস্বস্তিকর অখাদ্য বস্তু। এদিকে খাবার পরিবেশনায় মুরগীর মাংসে জমাট বাঁধা রক্ত পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে জিয়া মোড়ে কাজল হোসেনের ‘যা চাবেন তাই পাবেন' নামক হোটেল এন্ড রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইজাজ মাহমুদ অনিক এর খাবার প্লেটে এমন মুরগীর মাংসে জমাট বাঁধা রক্ত পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ক্যাম্পাসের ভাতের দোকান; অপুষ্টি, অতৃপ্তি, অযত্ন এবং অনিয়মের আতুড়ঘর। জুমার নামাজ শেষে একটু ফুরফুরা মুড আর পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে যখন দোকানে যাই তখন অগত্যাই দেখতে এবং খেতে হচ্ছে এসব! মুরগীর মাংসে জমাট বাঁধা রক্ত, ডালের মত পাতলা ঝোল। সপ্তাহে একদিন টাকা দিয়েও ভালো-মন্দ খাবার পরিবেশ এই ক্যাম্পাসের ভেতরে নেই।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে খাবারের দোকানগুলোতে এইরকম নানা অনিয়মসহ বাসি-পঁচা, তেলাপোকা, টিকটিকি যুক্ত খাবারের অভিযোগ নতুন নয়। তারপরও নেই কোন প্রতিকার। ভাতের হোটেল ব্যবসায়ীদের অবাধ এই ব্যবসা শিক্ষার্থীদের ক্যালরি ইনটেকের ঘাটতি হয়ে দাঁড়াচ্ছে এবং এর প্রভাব যে স্বাস্থ্যে এবং পড়ালেখায় গড়াচ্ছে না তার কোন গ্যারান্টি নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সংগঠন বিশেষ করে ক্যাম্পাসভিত্তিক কনজিউমার সংগঠনের এই বিষয়গুলোতে নিয়মিত শক্ত মনিটরিং এবং হস্তক্ষেপ কাম্য।
এ বিষয়ে 'যা চাইবেন তা পাবেন' ক্যান্টিনের মালিকের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমি প্রথমে স্বীকার করে নিচ্ছি। এর জন্য দুঃখিত। আসলে পোল্ট্রি মুরগি নিয়ে আসার পর রান্না করতে গেলে কোনো এক জায়গায় ইনজেকশনের দাগ পড়ে যায়। আমরা এগুলো নিয়মিত দেখে অস্বাভাবিক মনে হলে ফেলে দিই। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এমন হয়ে গেছে। আমরা প্রতিদিন একবার সিদ্ধ করে ফ্রাই করে ফেলি।
খাবারের মান বাড়ানোর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বলেন, দেখেন দ্রব্য মূল্য উর্ধ্বগতি। তাও চেষ্টা করে যাচ্ছি সর্বোচ্চ দেওয়ার। কিন্তু মাঝেমধ্যে কিছু শিক্ষার্থী আছে গায়ের জোরে খেয়ে চলে যায়, টাকা দেয় না। কার কাছে বলব? বাহিরে দোকান দিলে হাজার তিনেক খরচ হতো তা দিয়ে দিচ্ছি বলে সান্ত্বনা দিচ্ছি।
অন্যদিকে জিয়া মোড়ে কেএফসির মালিক কুদ্দুসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মাঝেমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে আমরা দায় নিব কেমনে? আমরা রাঁধুনিকে সর্বোচ্চ নির্দেশনা দিয়ে থাকি। খাবারের মান বৃদ্ধির প্রসঙ্গে বলেন, এখন যে অবস্থায় আছে তা দিয়ে পোষাচ্ছে না। মান বৃদ্ধি করতে হলে আরও দাম বৃদ্ধি করতে হবে। তখন তো পুলাপান আসবে না। খাবারের মেনু টাঙানো না কেন জানতে চাইলে বলেন, আমাদের কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছে। তবে সেইভাবে মেনু টাঙানো হয় না।
এদিকে দিনদিন খাবারের মান নিয়ে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা, কর্তৃপক্ষের নেই কোনো পর্যাপ্ত মনিটরিং।
ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন বলেন, খাবারের বিষয়ে লিখিত কেউ অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগীরা যদি অভিযোগ পত্র দেয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিব। প্রতিকার দেওয়াটা আমাদের দায়িত্ব। খাবারের মান ভালো করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
মন্তব্য করুন: