প্রকাশিত:
১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৮:২০
১৪ ফেব্রুয়ারি ঘিরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে হিন্দুদের 'স্বরস্বতী পূজা উদযাপন', প্রকৃতি প্রেমীদের 'সুন্দরবন দিবস পালন', বসন্তের আগমনে 'পহেলা ফাল্গুন', প্রচলিত ‘ভালোবাসা দিবস’ এবং সিঙ্গেল বা প্রেম বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছে।
ইবি পূজা উদযাপন পরিষদ কর্তৃক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা উৎসব পালন করা হয়েছে। বেলা ১০ টা থেকে বিকাল ২ টা পর্যন্ত প্রতিমা স্থাপন, দেবী অর্চনা ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, ধর্মালোচনা, প্রসাদ বিতরণ এবং ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কাস্টমসের উপ কমিশনার সুশান্ত পাল, রাবির অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন বিশ্বাস ও ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি প্রেমীরা এবং সাতক্ষীরা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সৌজন্যে বর্ণাঢ্য র্যালীর মাধ্যমে পালন করেন সুন্দরবন দিবস। সকাল ৯ টা থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে সমবেত হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে।
দিনব্যাপী ভালোবাসা বিনিময় করা হয় বিভিন্ন মহল। তন্মধ্যে যুগলপ্রেমের আনাগোনা বেশি লক্ষণীয় ক্যাম্পাসে। কিন্তু প্রেম বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা জিয়া মোড় থেকে বটতলা পর্যন্ত ভিক্ষোভ র্যালীর আয়োজন করেন। মিছিলে “কেউ পাবে কেউ পাবে না,তা হবে না, তা হবে না”, "অমুক ভাই সিঙ্গেল কেন, প্রশাসনের জবাব চাই" ইত্যাদি রম্যসূচক শ্লোগান দেয় তারা।
অন্যদিকে ভালোবাসার সিক্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনে ধরা দিয়েছে ফাগুন। বসন্তের আগমনে হলুদ রঙে রাঙিয়ে নিলো ক্যাম্পাস। প্রকৃতিতে শিমুল ফুল ফোটে জানান দিচ্ছে বসন্ত এসে গেছে। সারাদিন ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্পটে দেখা মিলে হলুদ শাড়ি পরিহিত বসন্তী।
বসন্ত আগমনী বার্তায় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না তাসনিম তারিন অনুভূতি ব্যক্ত করেন, আজ পহেলা ফাল্গুন। বসন্ত এসেছে প্রকৃতিতে। এটি বাঙালিদের সংস্কৃতি। সবার মন ফুলেফলে ভরে ওঠুক এই প্রত্যাশা রাখি। দিনটি উপভোগ করার জন্য আমাদের এই হলুদের আভায় সাজসজ্জা। বসন্ত আসবে, জীবনের রং পাল্টাবে, জীবন সুন্দর হবে।
প্রেম বঞ্চিত সংঘের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম বলেন, আজকের এই প্রহসনমূলক দিবস আমরা ঘৃণ্যভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। যেই ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে ভালোবাসার মূল্যায়ন হয় না সেটা আমাদের না। এটি চরিত্রহীন, লম্পট ও লুচ্চাদের দিবস। আমাদের মত সুশীল মানুষদের এই ধরনের দিবস পালন করা কাম্য নয়। আজকের মত এই নোংরা দিনে বঞ্চিত হয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি কারণ আমরা এসব নোংরামিতে নেই।
সুন্দরবন দিবস পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস. এ.এইচ ওয়ালীউল্লাহ বলেন, এই সুন্দরবন বড় বড় দুর্যোগে যেমন সিডর ও আইলার মতো বিপর্যয়ে একা ডাল হয়ে আমাদের রক্ষা করছে। এতটুকু কৃতজ্ঞতা থেকে আমাদের সকলের উচিত সুন্দরবনকে ভালোবাসা, সুন্দরবনের পরিবেশকে এবং জীববৈচিত্রকে সংরক্ষণ করা। আমাদেরকে যেভাবে গ্রাস করছে এতে রক্ষা করছে।
সরস্বতী পূজার আয়োজনে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বর্তমান সময়ে সমাজে বেঁচে থাকতে হলে দরকার মেধাশক্তি বা বুদ্ধিশক্তি। আজকে আমরা যে উদ্দেশ্যে সমবেত হয়েছি তা হলো বুদ্ধির দেবী, জ্ঞানের দেবীর আরাধনায়। যার নাম দিয়েছি আমরা স্বরসতী। সর্বপ্রথম দেবী এই স্বরসতী। ব্রহ্মা কে সৃষ্টি করতে বলা হয়েছিলো আর কোনোকিছু তৈরি করতে অবশ্যই জ্ঞান দরকার। আর সে জ্ঞানের দেবী আমাদের স্বরসতী। আজকের এইদিনে আমাদের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলবো নিজেকে দেবীর আলোয় আলোকিত করে নক্ষত্রের মতো ছড়িয়ে পড়তে।
মন্তব্য করুন: