প্রকাশিত:
১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৮:২৫
কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুরে গত ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ মঙ্গলবার সকালে অনুমান ৮ ঘটিকায় রাজিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তথ্য মতে জানা যায় যে, রাজিবপুর থানাধীন সুইচ-গেট নামক এলাকা হইতে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তাৎক্ষণিকভাবে রাজিবপুর থানা পুলিশ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হয়ে লাশের সুরত হালের প্রস্তুতি নেন। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির পরিচয় উদঘাটনের চেষ্টা চালায়। তদন্ত করে জানা যায় মৃত ব্যক্তি রৌমারী থানা এলাকার একজন অটো ভ্যান চালক। মৃত ব্যক্তির স্বজনের উপস্থিতিতে জানা যায় গত ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ সোমবার সকালে ৮ ঘটিকায় অটো বাইক চালক এনামুল হক (৫২) অটো নিয়ে বাহির হয়। রাত আটটা পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় তার স্বজনেরা আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারে এনামুল হক তার অটো গাড়িতে অজ্ঞাতনামা দুইজন ব্যক্তি সহ তাহাদের কার্টুন ভর্তি মাল নিয়ে রাজিবপুরের দিকে আসছে। নিখোঁজ এনামূল হক কে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তার ভাই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারে রাজিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অজ্ঞাতনামা মৃত ব্যক্তি আছে। পরে এনামুল হকের ভাই হাসপাতালে এসে মৃত অজ্ঞতা নামা ব্যক্তি কে তার ভাই বলে সনাক্ত করে। আশপাশে
খোঁজাখুঁজি করে মৃত ব্যক্তি পরিচালিত অটো ভ্যানটি খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই। পরবর্তীতে এনামুল হকের স্ধসঢ়;ত্রী মোসাম্মৎ আয়েশা খাতুন রাজিবপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এমন একটি চাঞ্চল্যকর ব্লুলেস মার্ডার মামলা তদন্তে পুলিশ সুপার কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের নির্দেশে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নেমে পড়ে টিম রাজিবপুর থানা। অক্লান্ত পরিশ্রম করে রৌমারী রাজিবপুর রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে ঢাকা সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ নিবিড় পর্যালোচনা করিয়া এক পর্যায়ে অটো গাড়িতে থাকা দুই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ছবি সংগ্রহে সক্ষম হয় রাজিবপুর থানা পুলিশ। তারপর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং সর্বোচ্চ মেধার এনালাইটিকাল সক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে মাত্র ১৬ দিনে আসামি সনাক্তকরণ মামলার মোটিভ উদঘাটন সহ আসামির অবস্থান নিরূপণ করে জামালপুর শেরপুর ময়মনসিংহ গাজীপুর নরসিংদী রাজবাড়ী জেলায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেফতার আসামিদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাদের দেখানো মতে দেওয়ানগঞ্জ হতে ছিনতাই হওয়া অটো উদ্ধার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি দুজনেই ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। তারা হলেন, মৃত শুক্কুর মুন্সি ছেলে মোঃ আবু হানিফ (৬৮) ও মৃত রিয়াজ এর ছেলে শেখ মোঃ ফারুক শেখ (৫৫)। তাদের জবানবন্দী ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক রেকর্ডের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের ছিনতাই চুরি সহ চেতনাশক বিষ প্রয়োগে চুরির মত অসংখ্য মামলা বিদ্যমান। আসামীরা আন্তঃজেলা অটো ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। নিহতের স্ধসঢ়;ত্রী মামলার বাদী আয়েশা সিদ্দিকা জানায়, আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। আসামিদের আমি ফাঁসি চাই। আমার স্বামী মরে যাওয়ার পরে আমার পরিবারটা একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছে। কিভাবে পরিবার চালাই আমি কিছুই বুঝতেছি না। নিহতের এক মাত্র ছেলে আহসান হাবিব বলেন, আমি ৮ম শ্রেণীতে পড়ি। আমার বাবাকে হত্যাকারীদের এত দ্রুত সময়ে মধ্যে রাজিবপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। আর সেই সাথে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমার বাবা আমার আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জন করে আমাদের ভরণ পোষণ করত। এখন আমার বাবাকে হত্যা করার পরে আমার পরিবারটা খুব কষ্টে চলতেছে কিভাবে সংসার চলে কি করি না করি আমরা কিছুই বুঝতে পারতেছি না। সরকার যেন আমাদের পরিবারের কোনো না কোনোভাবে সহযোগিতা করে আমি যেন ভালোভাবে পড়ালেখা করতে পারি।
রাজিবপুর থানার বরাতে জানা যায়, পুলিশের এই কর্মকা- নিঃসন্দেহে জেলা পুলিশ কুড়িগ্রামের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলের দৃঢ় ভূমিকা রাখবে। এমনই পুলিশি সেবার ব্রত নিয়ে জেলা পুলিশ কুড়িগ্রাম এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
মন্তব্য করুন: