প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২৩, ১২:৩০
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উচ্ছ্বাস, ঈদ মানে পরিবার পরিজনদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করা আর প্রিয়জনের সাথে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরে বেড়ানো।
তবে গত দুই মাস তীব্র গরমের কারণে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বাহিরের দর্শনার্থীদের তেমন একটা সমাগম ছিলোনা। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক চন্দ্র কিরণ ত্রিপুরা বলেন, ঈদের প্রথম দিন কম হলেও দ্বিতীয় দিনে পর্যটক সমাগম কিছুটা বেড়েছে। ঈদের প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজারের মত পর্যটক ভ্রমণ করেছে। তবে গত ঈদ মৌসুমের তুলনায় এবার এর সংখ্যা কমেছে।
কোরবানির ঈদের বন্ধে সেই মন্দাভাব কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠবে বলে মনে করছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু চলমান ছুটিতে বাহিরের পর্যটকদের আশানুরূপ দেখা না গেলেও আশে পাশের জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা গুলো থেকে আশা এবং স্থানীয়দের উপস্থিতি ছিলো চোখে পরার মত।
শনিবার বিকালে খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র দৃষ্টিনন্দন আলুটিলায় গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজন ও প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের সমাগমে ভরপুর হয়ে উঠে নান্দনিক সৌন্দর্যের আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র আর পার্বত্য জেলা পরিষদ (হর্টিকালচার পার্ক)। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই বিনোদন পিয়াসী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। বর্ষায় মেঘের ভেলা আর সবুজ পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে স্বপরিবারে বেড়াবে আসা ইয়াছিন আরফাত ও তার পরিবারের সদস্য বলেন, আমরা সাজেক ঘুরে খাগড়াছড়ি আসলাম। রিছাং ঝর্ণা ও আলুটিলা ঘুরলাম। সবুজ পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে বর্ষায় মেঘের ছুঁটে চলা দেখে মুখদ্ধ হয়েছি খুব ভালো লেগেছে। খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন স্পট গুলো ঘুরে দেখবো।
মিরপুর থেকে আসা আফরোজা মিম বলেন, অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছি খাগড়াছড়ি ভ্রমণে আসবো। “পাহাড় চূড়ায় দাঁড়িয়ে সাদা মেঘের ছুঁটে চলা, কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি, চারদিক সবুজে ঘেরা এমন সৌন্দর্য দেখতে হলে বর্ষাকালেই খাগড়াছড়িতে ভ্রমণে আসা উচিত। এবার ঈদের ছুটিটা বেশ ভালোই কাটল। আলুটির রহস্যময় সুড়ঙ্গে ঢুকে খুবই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেয়েছি।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ঈদের আগে থেকেই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পর্যটন এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার মাধ্যমে পর্যটকরা যাহাতে স্পট গুলোতে নির্বিঘেœ ঘুরাঘুরি করে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে সে জন্যে সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি নিরাপত্তা যোদ্দার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি হোটেল ব্যবসায়ী সমিতি’র সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া বলেন, চলতি মৌসুমে পর্যটকের সংখ্যা গত মৌসুমের চেয়ে কম। তিনি বলেন, “গতবার আমাদের হোটেলের কোনো কক্ষই খালি ছিল না। অনেক অতিথিকে কক্ষ ভাড়াও দিতে পারিনি। এবার হোটেলের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। পর্যটক আকর্ষণে হোটেলের প্রতিটি কক্ষে ২০ শতাংশ করে ছাড় দেওয়া হয়েছে।”
তবে, পর্যটক ও দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন, টুরিস্ট পুলিশ খাগড়াছড়ি ইউনিটের ওসি নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। “সাদা পোশাকের পুলিশের পাশাপাশি টহল টিমও কাজ করবে। নিরাপত্তার কোনো সংকট নেই। টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশও পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় নিরাপত্তা দিচ্ছে।”
মন্তব্য করুন: