প্রকাশিত:
২ জুলাই ২০২৩, ২২:৪২
জেলার সদর, লালপুর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় একদিনে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বাবা-ছেলেসহ পাঁচজন। রোববার (০২ জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার গুনারি গ্রামে নিজ বাড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন মো. শুকুর আলী (৪৫) ও তার ছেলে মো. আমির হামজা শুভ (১৩)।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আজ বিকেলে নাটোর সদর উপজেলার গুনাড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে অটোরিকশায় চার্জ দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন শুকুর আলী।
বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্কুল শিক্ষার্থী ছেলে আমির হামজা শুভ বাবাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। অন্য স্বজনরা দেখতে পেয়ে তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ বিষয়ে সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
একই দিন বিকেলে পৌনে তিনটার সময় বৃষ্টির পর লালপুরের মিশ্রিপাড়ার ফুটবল মাঠে বজ্রপাতে প্রাণ হারান মো. বোরহান কবির শপথ (৩৫) নামে এক যুবক। তিনি উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের মিলকি পাড়া গ্রামের সোলায়মান বাবলুর ছেলে।
লালপুর থানার ওসি উজ্জ্বল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রোববার বিকেলে মিশ্রিপাড়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মিশ্রিপাড়া ও পার্শ্ববর্তী আব্দুলপুর এলাকার যুবকদের বিবাহিত ও অবিবাহিতদের মধ্যে সৌখিন ফুটবল খেলা চলছিল।
শপথ বিবাহিতদের পক্ষে খেলায় অংশ নেন। খেলার সময় মাঠে বজ্রপাত হলে শপথ গুরুতর আহত হন। স্থানীরা আহত শপথকে উদ্ধার করে দয়ারামপুর বাজারে মজুমদার ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার অংশুমান মজুমদার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৫টার সময় জেলার নলডাঙ্গায় রেলব্রিজ পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী ট্রেনের ধাক্কায় বারনই নদীতে পড়ে পানিতে তলিয়ে গিয়ে মোহাম্মদ মরু (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার পূর্ব সোনাপাতিল গ্রামের মৃত আহাদ আলীর ছেলে।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিকেলে আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে মরু নামে ওই ব্যক্তি নলডাঙ্গা বারনই নদীর ওপর রেলব্রিজ দিয়ে সোনাপাতিল থেকে নলডাঙ্গা বাজারে যাওয়ার জন্য পার হচ্ছিলেন।
এ সময় প্রথমে চিলাহাটি থেকে ঢাকাগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার। পরে ব্রিজের পিলারের সঙ্গেও ধাক্কা খেয়ে বারনই নদীতে পড়ে পানিতে তলিয়ে যান। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিক খোঁজ করে তার সন্ধান না পেয়ে নলডাঙ্গা থানা পুলিশ ও সান্তাহার জিআরপি থানা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তার সন্ধান ও পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা করা হয়। পরে রাজশাহী থেকে ডুবুরি দল এনে রাত ৮টার দিকে ব্রিজের অদূর থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওসি আরও বলেন, তার মাথায় আঘাত লেগে মগজ বের হয়ে গিয়েছিল।
এছাড়া, ঈদের দিন অতিরিক্ত মদ্যপানে অসুস্থ হয়ে জুয়েল (৩০) নামে এক যুবক নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। আজ রোববার সন্ধ্যায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুয়েলের মৃত্যু হয়। জুয়েল নাটোর পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন।
মন্তব্য করুন: