প্রকাশিত:
২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১২:৪৫
কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো একটি নতুন জাতের বেগুন চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মোঃ এরশাদ আলী (৪২) নামে একজন কৃষক। এ বছরেই ক্ষেতে বেগুনের ব্যাপক ফলন হওয়ায় তিনি বেশ খুশি। তার ক্ষেতের এ বেগুনের একেকটির ওজন এক থেকে দের কেজি পর্যন্ত।
প্রথমে এক পলক তাকিয়ে দেখলেই মনে হবে এটি লাউ কিন্তু লাউ নয়। বেগুনগুলো দেখতে লাউয়ের মতো হওয়ায় কৃষক এরশাদের গ্রামের লোকজন এটির নাম দিয়েছেন 'লাউবেগুন'। আর এই বেগুন দেখতে প্রতিদিন তার আশপাশের গ্রামসহ বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে কৃষক দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন।
সোমবার ২৬ ফেব্রুয়ারি সরোজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা (কৃষক) মোঃ এরশাদ আলী প্রায় ১০ বছর ধরে কৃষি কাজ করছেন। প্রতিবছর শীত মৌসুমে ৬০ শতাংশ জমিতে দেশি বেগুন, টমেটো, পেয়াজ, ফুলকপি, বাঁধাকপি চাষ করেন।
কিন্তু তেমন সফলতা অর্জন করতে পারছিলেন না তিনি। তবে এ বছর বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।
কৃষক এরশাদ আলী বলেন, প্রতিবছর দেশি বেগুন চাষ করলেও লাভবান হতে পারছিলাম না। এ বছর রাজিবপুর কৃষি অফিস থেকে আমাকে বারি-১২ জাতের বেগুনের বীজ ও সার দিয়েছে চাষ করার জন্য। আমার ৬০ শতাংশ জমির মধ্যে ২০ শতাংশ জমিতে বারি-১২ জাতের বেগুন রোপণ করি। আর বাকি জমিতে টমেটো, ফুলকপি, পাতাকপি ও পেয়াজ চাষ করি।
তিনি আরো বলেন, ২০ শতাংশ জমিতে আমার ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩ মাস ১০ দিনের মধ্যে বেগুনগুলো ১ কেজি আর কোনো কোনোটি দেড় কেজি ওজনের হয়।
তিনি বলেন, ক্ষেত থেকে বেগুন তুলে পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য প্রথমদিন নিয়ে গেলে পাইকাররা দেখে অবাক হন। প্রথমদিন প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা কেজি দামে প্রথম ধাপে ১২ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি এবং দ্বিতীয় ধাপে আরো ২০ হাজার টাকার মত বিক্রি করেছি। ২০ শতক জমিতে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা বেগুন বিক্রি করেছি দাম যদি স্থিতিশীল থাকে তাহলে আরো দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা বিক্রি করার পরিকল্পনা আছে। চাষ করার আগে বুঝতে পারিনি এতো লাভজনক এটি। আশা আছে আগামী বছর এক একর জমিতে এ বেগুন চাষ করবো।
স্থানীয় আমিনুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেনের সাথে আলাপকালে তারা জানা, এরশাদ এ বছর বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করে বেশ সফল হয়েছেন। তার এক একটি বেগুন অন্তত এক থেকে দের কেজি পর্যন্ত হয়েছে। তার এ বেগুন চাষ দেখে আমরাও অভিভুত। বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করে এরশাদ সফল হওয়ায় আগামীতে আমরাও এ জাতের বেগুন চাষ করবো।
রাজিবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: রতন মিয়া বলেন, উপজেলায় এবারই প্রথম বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ হয়েছে। এ বছর আমরা রাজিবপুরের ৫ জনকে বিনামূল্যে বীজ ও সার দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করিয়েছি। আমরা মাঠে গিয়ে দেখেছি কৃষকরা প্রত্যেকেই সফল হয়েছেন। তবে এরশাদ এর চাষাবাদ বেশি ভালো হয়েছে। তাই প্রতিনিয়ত লোকজনের ওখানে ভিড় করছে।
তিনি আরও বলেন, ওই কৃষকদের সফলতা দেখে নতুন করে অনেক কৃষক আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করার জন্য। আমারা আশা করছি আগামীতে আরও বেশি কৃষকে দিয়ে এ জাতের বেগুন চাষ করবেন।
মন্তব্য করুন: