প্রকাশিত:
৭ মার্চ ২০২৪, ১৬:৩৫
পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে আজও আমরা বেরিয়ে আসতে পারিনি। নারীর সম্ভাবনা বিশাল কিন্তু তাঁদের চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মেয়েদের চ্যালেঞ্জটা শুরু হয় পরিবার থেকে। একটা পরিবারে ছেলেরা যে সুযোগ পায়, মেয়েরা তা পায়না। মেয়ে ও ছেলের মধ্যে পরিবারে অভিভাবকরা যেন বৈষম্য না করেন, সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা দরকার। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসা দরকার। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতি অনেক বেশি। এখন নারীরা সমাজের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন।
বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে দৈনিক নাগরিক সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় নেত্রকোণা ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) জান্নাত আফরোজ কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, নারীর অগ্রগতি সবক্ষেত্রেই মোটামুটি দৃশ্যমান। বলা যায়, হিমালয় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নারীর দৃপ্ত বিচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ নারী পুলিশ।
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূর প্রসারী উদ্যোগে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ পুলিশে নারীরা যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার পুলিশ সদস্যদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে যোগ্য করে গড়ে তুলতে সততা ও নিষ্ঠার সাথে ইন-সার্ভিস কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) জান্নাত আফরোজ নিরলস পরিশ্রম করছেন। জান্নাত আফরোজ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ হতে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্মাতক ও স্মাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। স্মাতক শেষ করেই তিনি ২০০৬ সালে ২৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সাফল্যের সাথে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হন।
চাকুরী জীবনের শুরুতে তিনি নরসিংদী জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই), র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব), পুলিশ হেডকোয়ার্টোর্সে কর্মরত ছিলেন। চাকুরী জীবনে এই নারী পুলিশ কর্মকর্তা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ২০১৪-২০১৫ সালে হাইতি এবং ২০১৬-২০১৭ সালে কঙ্গোতে দুইটি শাান্তি মিশন সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন। শান্তি মিশন শেষে তিনি র্যাব ৫ এ এডমিন অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি পুলিশ সুপার হিসাবে পদন্নতি পেয়ে নেত্রকোণা ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কমান্ড্যান্ড (পুলিশ সুপার) হিসাবে যোগদান করেন।
নেত্রকোণা ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে যোগদানের পর হতে অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও দক্ষতার সহিত নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার পুলিশ সদস্যদের কার্যকর প্রশিক্ষণ ও পেশাদারী সেবা প্রদান করে আসছেন। নেত্রকোণা ইনসার্ভিস সেন্টারে নিয়মিতভাবে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক, মানবাধিকার জেন্ডার সচেতনতা এবং সামাজিক দায়িত্ব কোর্স, মানব পাচার ও প্রতিরোধ কোর্স এবং জনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা কোর্স সমূহ তাঁর নেতৃত্বে দক্ষতার সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে।
নেত্রকোণা ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কমান্ড্যান্ড (পুলিশ সুপার) জান্নাত আফরোজ বলেন, নারীদের পুলিশে যোগদান নিয়ে এক সময় সমাজে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। বর্তমানে নারী পুলিশ সদস্যগণ বিভিন্ন ইউনিটে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
মন্তব্য করুন: