প্রকাশিত:
১২ মার্চ ২০২৪, ১৫:৩৮
উৎপাদক পর্যায়ে যে লেবু ৬-৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সেটি ঢাকায় এসে ২০ টাকায় কেন বিক্রি হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম। ভ্যালু চেইন ও সাপ্লাই চেইনকে আরও উন্নত করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের বিষয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিমন্ত্রী। সেখানে লেবুর ব্যাপারে এক প্রশ্নে তিনি এ প্রশ্ন করেন।
বাণিজ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজারে চালের দাম স্বস্তিতে আছে বলে আমি মনে করি। এক্ষেত্রে আমি কোনো অস্থিরতা পাইনি, আপনাদের (সাংবাদিক) কাছ থেকে কোনো অভিযোগও পাইনি। তেলের মূল্য ১৭৩ টাকা থেকে ১৬৩ টাকা আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। খোলা বাজারে ১৪৯ টাকায় তেল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যাতে সরবরাহ ঠিক থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করছি।
তিনি বলেন, বাজারে চিনি, ডালসহ কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো স্বল্পতা কিংবা সংকট নেই। কাজেই এটিকে আমি অবশ্যই স্বস্তি বলবো। লেবু একটি মৌসুমি পণ্য। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নিয়ে আমি আজও কথা বলেছি। কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সচিব ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে আজও কথা বলেছি, যাতে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
আহসানুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি কাজ। শুল্ক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমদানি পণ্যের বাজারে বিতরণ নিশ্চিত করা। পণ্য আমদানি কিংবা উৎপাদনও আমাদের কাজ না। দ্বিতীয় হলো, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন যেসব পণ্য এখানে উৎপাদিত হচ্ছে যেমন তেল, চিনিসহ অন্যান্য জিনিস, সেগুলোর বাজারে সরবরাহ যাতে মসৃণ থাকে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি উৎপাদিত পণ্য কৃষি বিপণন বিভাগ দেখে। আমরা বাজার তদারকি করি। বাজার তদারকি করে আমরা যেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি, অনেকেই আমাদের বাজারে যাওয়াটা লম্ফঝম্ফ মনে করছেন, কেউ মনে করছেন, নতুন আসছেন শিখতে, শিক্ষানবিস হিসেবে দেখছেন। আমরা এই সমালোচনাকে গুরুত্ব দিই না, আমরা নিজেদের চেষ্টার বিষয়টি দেখি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করার। সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাইকারি বাজার, খুচরা বাজারে যাচ্ছি। সামাজিক মাধ্যমে ট্রল হচ্ছে, আগে কী সাপ্লাই চেইন ছিল না? আমি কখনোই বলিনি, সাপ্লাই চেইন ছিল না, ভ্যালু চেইন ছিল না। এই ভেল্যু চেইনের উপকরণগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি জানান, উৎপাদক পর্যায়ে যারা উৎপাদন করছেন, সেখানে পরিবহন ব্যবস্থা আছে। সেই পরিবহন ব্যবস্থা থেকে পাইকারি বাজার আছে। এগুলো আরও ভালো করার সুযোগ আছে। আপনারা বলছেন, লেবুর দামের কথা। আমার এলাকায়ও লেবু হয়, দেলদুয়ারে প্রচুর লেবুর বাগান আছে। সেখানে অনেক জায়গায় কেবল লেবুর ফুল উঠছে। কিছু কিছু উৎপাদন হচ্ছে। সেখানে ছয় থেকে সাত টাকায় লেবু বিক্রি হচ্ছে। ছয়-সাত টাকার লেবু, ঢাকায় এসে ২০ টাকা হয় কেন? এটাই ভ্যালু চেইন, সাপ্লাই চেইনে আরও উন্নত করার জায়গা। এটা কী পরিবহনের কারণে বাড়ছে, নাকি আরও কোনো বাধা বিপত্তি আছে? আর কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে? আসার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসেছি, পরিবহনের জায়গাটা যাতে স্বচ্ছ থাকে।
তিনি বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে জানতে পেরেছি, সেখানে অনেকগুলো মধ্যস্বত্বভোগী আছে। তাদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যারা পাইকারি বাজারে থাকবেন, তাদের পরিচয়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স থাকার কথা। সেটা নিয়েও টক-শো হচ্ছে, আমি নাকি এখন খুচরা বাজারেও ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে মুদি দোকান চালাতে বলেছি? বলি একটা, সেটা ট্রান্সফার হয়ে যায় আরেকটা। আমরা স্বস্তিতে আসার চেষ্টা করছি। সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমাদের উদ্যোগগুলো চলতে থাকবে।
মন্তব্য করুন: