নানা আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপন করা হয়েছে। দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ ২০২৪) আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শোভাযাত্রা, গার্ড অব অনার প্রদান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নোবিপ্রবির মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম। অনুষ্ঠানে নোবিপ্রবি পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।
এদিন সকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর স্বাধীনতা দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়। প্রথমে নোবিপ্রবির মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, ইনস্টিটিউট, হল, বিভাগ, শিক্ষক সমিতি ও অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারীবৃন্দ ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
সকাল সাড়ে দশটায় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ পাঠের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম বলেন, ‘আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে বাংলাদেশ কতখানি এগিয়েছে? আমরা কী পেয়েছি? যে মহান নেতার হাত ধরে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন, যার অবদানে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র সেই নেতাকে দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র ৩ বছরের মাঝে আমাদের হারাতে হয়েছে। অথচ বঙ্গবন্ধু সবসময় বিশ্বাস করতেন বাঙ্গালি তাকে কখনো হত্যা করতে পারে না। বঙ্গবন্ধু মাত্র ৫৫ বছর বেঁচে ছিলেন, এই ৫৫ বছরের ১৩ বছরই তাকে জেলে কাটাতে হয়েছে। তিনি শুধুমাত্র আমাদের নেতা ছিলেন না, সেসময় তিনি সারাবিশ্বের নিপীড়িত মানুষের নেতা হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ছিলেন বঞ্চিত জনতার নিরব কন্ঠস্বর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালের পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি চাই। আমরা চাই পাকিস্তানীরা স্বীকার করুক যে তারা আমাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিলো। পূর্ব পাকিস্তানের সেই বাংলাদেশ আর আজকের এই বাংলাদেশ এর মধ্যে অনেক পার্থক্য। পাকিস্তানীরা আজ আপসোস করে বলে, কবে আমরা শেখ হাসিনার মতো একজন নেতা পাবো। আজ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, আজকের দিনে এ প্রত্যাশা করি। জাতির পিতাসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক, নোবিপ্রবি প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান, নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন পলাশ, মুখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. এমডি মাসুদ রহমান, আইআইএস এর পরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুর রহমান, আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ, মৃত্তিকা,পানি ও পরিবশে বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন, প্রভোস্ট ড. কাওসার হোসেন, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সফিকুল ইসলাম, কর্মচারীদের পক্ষে আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। সভা সঞ্চালনা করেন অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক আফরিদা জিননুরাইন উর্বী ও বিএমবি বিভাগরে সহকারী অধ্যাপক লিজা তেরেজা রোজারিও। সভায় নোবিপ্রবির বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটসমূহের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া এর আগের দিন (২৫ মার্চ ২০২৪) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে বাঙালি জাতির ওপর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও নিষ্প্রদীপকরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মন্তব্য করুন: