প্রকাশিত:
২৮ মার্চ ২০২৪, ১৫:১৩
বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের লক্ষ্যে যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করেছে বাংলাদেশ-চীন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্ভাব্য বাংলাদেশ-চীন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সম্পাদনের নিরিকে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমাদের প্রয়োজনে আমরা আমদানি করি৷ প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি করি। এটা প্রাথমিক ধাপ। আজকে ডকুমেন্ট বিনিময় করলাম। তৈরি পোশাক ছাড়াও অন্য অনেক খাত থেকে রপ্তানি হচ্ছে। এছাড়া আর কোন কোন খাত থেকে করতে পারি সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
সিনিয়র সচিব বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি বেশ কিন্তু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো এবং মূল্য সংযোজনের হার অন্যতম। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওইসব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। ফলে ওই সব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। চীনে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা।
তিনি বলেন, পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের ১৪-১৫ অক্টোবর চীনের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফরকালে বাংলাদেশ-চীনের মধ্যে এফটিএ স্বাক্ষরের বিষয়ে যৌথ সম্ভাব্যতা যাচাই সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই করা হয়।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, স্বাক্ষরিত এমওইউ বাস্তবায়নের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে উভয় দেশের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত দল (ওয়ার্কিং গ্রুপ) গঠন করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২০-২১ জুন সময়ে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বাংলাদেশ-চীন সম্ভাব্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত দল খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন করে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে করোনা অতিমারির কারণে এ বিষয়ে অগ্রগতি না হলেও উভয় দেশ যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদনের নিজ নিজ অংশ প্রস্তুত করে। যার ফলশ্রুতিতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও চীন যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করা হয়।
মন্তব্য করুন: