প্রকাশিত:
৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:২৪
নম্বর ক্লোন করে বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্টের পিন হাতিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুটি চক্রের নয় সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তাররা হলেন, চক্রের হোতা ইসমাইল মাতুব্বর (২১), ইব্রাহিম মাতুব্বর (২৭), মো. মানিক ওরফে মতিউর রহমান (১৯) ও মো. সিনবাদ হোসেন (২৪)। তাদের কাছ থেকে ২২টি মোবাইল ফোন, ৩৫টি সিম কার্ড, মোবাইলের পাঁচটি চার্জার, একটি ল্যাপটপ, একটি ব্যাগ ও নগদ ৩০ হাজার হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার ইসমাইল মাতুব্বর বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা ও ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাৎ চক্রের হোতা। নম্বর ক্লোন করে নিজেকে শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কৌশলে বিকাশ বা নগদের পিন নম্বর হাতিয়ে নিতেন। এভাবে তার চক্র প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। চক্রের সবাই স্বল্প সময়ে ধনী হওয়ার আশায় প্রতারণার আশ্রয় নেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
অন্যদিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা হলেন, সুমন ইসলাম (২০), মাহমুদুল হাসান পলক (২০), সাব্বির খন্দকার (১৯), সাকিব (১৯) ও রাসেল তালুকদার (২৩)। তাদের কাছ থেকে ১৪টি মোবাইল ফোন, ৯১টি সিম কার্ড, একটি ব্যাগ, ১০৪টি ইয়াবা ট্যাবলেট ও নগদ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার সুমন ইসলাম মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ বা নগদ) ব্যবসায় অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে এজেন্টদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করা চক্রের হোতা। তার নেতৃত্বে চক্রটি প্রায় ৮-৯ মাস ধরে বিকাশ বা নগদ এজেন্টদের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল।
সুমন প্রথমে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বিকাশ বা নগদের প্রতিনিধিদের নম্বর ক্লোন করে এজেন্টদের কল দিয়ে নিজেকে বিকাশ বা নগদের প্রতিনিধির পরিচয় দিতেন। চক্রের সদস্যরা প্রতিদিন গড়ে ২০টি নম্বরে কল দিতেন। এরপর এজেন্টদের হাজারে ৪ টাকার পরিবর্তে ৮-১০ টাকা লাভ করার বিভিন্ন অফার সম্পর্কে অবহিত করতেন।
এক্ষেত্রে এজেন্টরা সেই অফার সম্পর্কে অবগত নন বললে সুমন এসআরের ফোন নম্বর ক্লোন করে এজেন্টদের কল করে এসআর পরিচয় দিয়ে বলতেন, তিনি আমাদের বস। তিনি যেভাবে বলেন, সেভাবে কাজ করুন। এভাবে কৌশলে ভুক্তভোগী এজেন্টদের অ্যাকাউন্টের পিন হাতিয়ে নিতেন তিনি। পরে অ্যাকাউন্টের অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
চক্রটি দুই বছর ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৬০-৭০ জন বিকাশ বা নগদ এজেন্ট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তারা সবাই স্বল্প সময়ে কোটিপতি হবার আশায় এবং মাদক সেবনের অর্থ যোগান দিতে এই প্রতারণার আশ্রয় নেন বলে জানান। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য করুন: