প্রকাশিত:
২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১১
বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ—এই দুইমাস গ্রীষ্মকাল। এই সময়ে সূর্যের প্রচন্ড তাপে অতিষ্ঠ থাকে জনজীবন। এপ্রিলের শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চলমান তাপপ্রবাহ মাসজুড়েই থাকবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেলেও ধরণী শীতল হচ্ছে না।
ভোর আর দুপুরের তাপপ্রবাহের মধ্যে মধ্যে দারুণ ফারাক দেখা যাচ্ছে। যারা বাইরের গরম থেকে এসি রুমে ঢুকছেন তাদের বিপত্তি হচ্ছে বেশি। অত্যধিক তাপ প্রবাহের কারণে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। তবুও জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হচ্ছেন কর্মজীবীরা।
ঋতু বদলের এই সময়ের সর্দি, কাশি, পেটের গোলমাল, ডায়রিয়া আর জ্বর পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঠান্ডা–গরমের তারতম্যের ফলে শরীরে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব। এই গরমে শিশু আর বৃদ্ধদের জন্য ভয় বেশি। কারণ তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। গরম থেকে রক্ষা পেতে কিছু নিয়মকানুন মানা প্রয়োজন। যেমন:
১. বাইরের গরম থেকে এসে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করবেন না। এতে ঠান্ডা সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
২. এই সময় তাপমাত্রার পার্থক্য কারণে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বেশি তেল, মশলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলুন। গরমে পেটের জন্য ভালো নয়, এমন খাবার কম খাবেন।
৩. সুস্থ থাকার জন্য তেল, মশলা কম দিয়ে তরকারি রান্না করুন। কম মশলায় মাছ আর সবজি দিয়ে রান্না করা তরকারি খেতে পারেন। কেবল জিরা আর দু–একটা কাঁচামরিচ দিয়ে রান্না করে খেতে পারেন। আবার সামান্য পাঁচফোড়ন দিয়ে ভাপে সিদ্ধ সবজিও খেতে পারেন। পাশাপাশি তিতা করলার ডাল, আম ডাল, লাউও খেতে পারেন।
৪. রেড মিট ও ফাস্ট ফুড খাবার খাবেন না। গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। তাই প্রচুর পানি পান করতে হবে। সকাল ১০টার আগে রান্নাঘরের কাজ শেষ করে নিন।
৫. গরমে হালকা সুতির পোশাক পরিধান করুন। সকাল ১০টার পর এবং বিকাল ৫টার আগে ঘর থেকে বের না হওয়া ভালো। এই সূচি মানতে না পারলে সঙ্গে ছাতা, রোদ চশমা ও পানির বোতল সঙ্গে নিন।
৬. লেবু পানি, ডাবের জল, তরমুজ, বাঙ্গি, টক দই ও মৌসুমি ফল খান। এতে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হবে।
৭. দিনে অন্তত দুইবার গোসল করুন। রাতে শোয়ার আগে গোসল করার চেষ্টা করুন। শিশুদের বাইরে থেকে আসার পর সঙ্গে সঙ্গে গোসল করাবেন না।
৮. ঘরের বাইরে বেরুবার আগে পানি পান করুন। আবার ফিরে এসে পানি পান করুন। এ ছাড়া খেয়াল রাখুন প্রস্রাব ঠিক মত হচ্ছে কিনা বা গাঢ় রং হচ্ছে কিনা।
৯. বাইরে থেকে এসে এসি রুমে ঢুকবেন না। একটু জিরিয়ে নিন, এরপর যান তাপানুকুল ঘরে ঢুকুন।
১০. অনেকের বাইরের গরমে হতে পারে হিট স্ট্রোক। অত্যধিক গরমে কারো হিট স্ট্রোক হলে, অবিলম্বে তাকে শীতল ছায়াযুক্ত জায়গায় যান। এরপর তাকে পানি দিয়ে মুছিয়ে দিন।
১১. এ ক্ষেত্রে রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে পানি খাওয়াতে হবে। তবে অচেতন বা আচ্ছন্ন ভাব থাকলে ঠোঁট ফাঁক করে পানি দেবেন না, এতে হিতে বিপরীত হবে। পানি ঢুকে যেতে পারে শ্বাসনালিতে । প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
মন্তব্য করুন: