বুধবার, ২৭শে নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ২৫ শহীদ পরিবারকে ৮ লাখ টাকা করে অনুদান প্রদান
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে সুখবর দিলো বিআরটিএ
  • রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ
  • গণমাধ্যমে হামলা-ভাঙচুর হলে ব্যবস্থা
  • কঠোর হতে চায় না সরকার, আমরা চাই শান্তিপ্রিয় সমাধান
  • বুড়িচংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  • নিম্নচাপে উত্তাল সাগর, ৪ সমুদ্রবন্দরে সতর্কসংকেত
  • ঢাকার যে ৫ এলাকায় আজ বেশি বায়ুদূষণ
  • সংঘর্ষে না জড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের
  • যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

খুলনায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

মোঃ শাকিব হোসাইন রাসেল ,খুলনা

প্রকাশিত:
২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৫৯

তীব্র তাপদাহের সঙ্গে গরম বাতাস বইছে। প্রচণ্ড গরম, কাঠফাটা রোদে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। একের পর এক জারি করা হচ্ছে হিট এ্যালার্ট। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে খুলনায় বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইসতিসকার) আদায় করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর শাখার আয়োজনে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে একাত্বতা প্রকাশ করে অংশগ্রহণ করে খুলনা জেলা ইমাম পরিষদ।

নামাজে ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন খুলনা গোয়ালখালি ক্যাডেট স্কীম মাদ্রাসার মুহতামিম অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল। এতে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নামাজ পড়তে আসেন মুসল্লিরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরীর সহ-সভাপতি শেখ মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, মুফতি ইমরান হোসাইন, খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা এ এফ এম নাজমুল সউদ, প্রচার সম্পাদক মোল্লা মিরাজুল হক।

নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি এবং গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এ সময় মুসল্লিরা অঝোরে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, হাদিসে এসেছে যখন এমন উত্তপ্ত আবহাওয়া হতো রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। খুলনায় গত কয়েকদিনের তাপদাহে মানুষ অতিষ্ঠ হয়েছে। প্রাণীরা মরণাপন্ন হয়েছে। এই জন্য আমরা সুন্নতের আমল হিসেবে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আমরা আদায় করলাম। যেন আল্লাহ তা’আলা এই উসিলায় দেশের এই আবহাওয়াকে পরিবর্তন করে সুশীতল করে দেয়। আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলাম, তওবা করলাম, বৃষ্টির জন্য দোয়া করলাম।

সহিহ মুসলিমের এক বর্ণনায় এসেছে, আনাস ইবনু মালিক রা. থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি জুমার দিনে দারুল কাযার দিকের দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। ঐ ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামলে গিয়ে দাঁড়াল এবং বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সম্পদ বিনষ্ট হল। রাস্তা ঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। বৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করুন। আনাস রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় হাত তুলে বললেন, হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিন।

আনাস রা. বলেন, আল্লাহর কসম আমরা আকাশে কোনো মেঘ দেখেনি। আমাদের এবং সালা পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে কোনো ঘরবাড়িও ছিল না। হঠাৎ পাহাড়ের পশ্চাৎ দিকে হতে তীরের ন্যায় এক খণ্ড মেঘ উদিত হল। যখন তা মধ্যাকাশে পৌঁছাল তখন তা ছড়িয়ে পড়ল। এরপর বর্ষণ শুরু হল। রাবী বলেন, আল্লাহর কসম, আমরা এক সপ্তাহ পর্যন্ত সূর্য দেখিনি

নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, প্রচণ্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠঘাট কৃষিজমি। তীব্র খরায় ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষ। একের পর এক জারি করা হচ্ছে হিট এ্যালার্ট। হিট স্ট্রোকে মারা যাচ্ছে মানুষ। এই অবস্থায় বৃষ্টি হওয়াটা খুব দরকার। বৃষ্টি হলে গরম কমে যাবে। আল্লাহ তা’আলা সালাতের মাধ্যমে বৃষ্টি বা পানি চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একত্রে নামাজ আদায় করেছি।

নামাজে অংশ নেওয়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরীর সহ-সভাপতি শেখ মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, গত কয়েক দিনের অসহনীয় গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণ। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না অগভীর নলকূপ ও সেচ পাম্পে। তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। কাঠ ফাটা রোদ, প্রচন্ড গরমে সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে চলছে জীবন। মাঠের ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টি চেয়ে নামাজ আদায় ও মোনাজাত করা ছাড়া মুমিনদের কোন উপায় নাই। ধর্মমতে একে ‘সালাতুল ইসতিসকার’ বলা হয়। খুলনাবাসী আজকে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির প্রার্থনা করেছেন।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর