প্রকাশিত:
৮ মে ২০২৪, ১৭:২৯
সোমবার (৬ মে) দুপুরের দুই ঘণ্টার ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি। দুদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও স্পষ্ট ক্ষতচিহ্ন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পল্লী বিদ্যুতের অবকাঠামো। এখনো স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছে মানুষ। গাছ উপড়ে পড়ে পল্লী বিদ্যুতের চার লক্ষাধিক গ্রাহকের মধ্যে দুই লাখের বেশি গ্রাহকের এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থা সচল হলেও গ্রামীণ সড়কগুলো শতভাগ সচল হয়নি।
ফেনী শহরতলীর নতুন বাজার ও ফকির বাজার এলাকা। সোমবার দুপুরে ঝড় ও বৃষ্টির পর সেই যে বিদ্যুৎ গেলো আর এলো না। টানা ৩৬ ঘণ্টার বেশি সময় বিদ্যুৎ বিহীন রয়েছে জনপদ। প্রাত্যহিক জীবনে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষগুলো। উপায় না পেয়ে জ্বালাতে হচ্ছে মোমবাতি ও হারিকেন। এখনো সড়কে পড়ে আছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। ঠিক কবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্বাভাবিক হবে বলতে পারছে না কেউ। তীব্র গরমে ছড়িয়ে পড়েছে হাহাকার।
কবির আহম্মদ নামের স্থানীয় একজন জানান, খবর পেয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোক এসেছিল একবার কিন্তু খুঁটির মেরামত করেনি। কবে নাগাদ এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হবে তা জানে না কেউ।
দুর্ভোগের এ চিত্র শুধু এই এলাকায় নয়, সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের ইলাশপুর, বিরলী। দাগনভূঞাঁ উপজেলার রাজাপুর, সিন্দুরপুর, সোনাগাজীর বিভিন্ন এলাকা, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরামের অনেক এলাকার চিত্রও এমন। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও অধিকাংশ এলাকা এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
আজগর আলী নামের পাঁচগাছিয়া এলাকার এক বাসিন্দা জানান, দুদিন ধরে সীমাহীন ভোগান্তিতে আছেন তারা। ঘরে পানি নেই, আলো নেই। মোবাইলগুলো চার্জশূন্য হয়ে পড়ায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে রয়েছে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে।
ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবারের কালবৈশাখী ঝড়ে ১১৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি, ৮৩৯টি স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। ৯৭৬টি স্থানে তারের ওপর গাছ পড়েছে। ৫৮টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে। ৫০৯টি মিটার ভেঙে গেছে। সোমবার ১২টার পর থেকে জেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে তারা। শিগগিরই বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছেন তারা।
ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, মাঠে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। আশা করা যাচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।
৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও পল্লী বিদ্যুতের চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে দুই লাখের বেশি গ্রাহকের এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। অন্ধকারে রয়েছে গ্রামীণ জনপদ। পুরোপুরি চালু হয়নি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সংযোগও।
মন্তব্য করুন: