প্রকাশিত:
১৫ মে ২০২৪, ১২:৪৯
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্বতন্ত্র ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে মোট ১০৮ দশমিক ৫১ নম্বর পেয়ে পেয়ে প্রথম হয়েছেন আশিক মিয়া। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে পড়তে চান।
তিনি গাজিপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার হয়দেবপুর গ্রামের তাফাজ্জল খান ও নাছিমা খাতুন দম্পতির ছেলে। আশিক উচ্চমাধ্যমিক (দাখিল) গাজিপুরের গলদা পাড়া দাখিল মাদরাসা থেকে জিপিএ ৪.৯৪ এবং উচ্চমাধ্যমিক (আলিম) তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
তিনি জানান, ছোটবেলা থেকে আমার ও আমার আব্বু আম্মুর স্বপ্ন ছিল কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আল কুরআনে পড়ার। আল্লাহ তায়ালা সেই স্বপ্নটাকে পূরণ করেছেন। আসলে আমার এই এডমিশন জার্নিটা একটু অন্যরকম ছিল। আমি শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতি নিতে চাচ্ছিলাম। এমনকি প্রস্তুতির জন্য আমি একটা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলাম এবং ঢাকায় অবস্থান করার জন্য বাসা পর্যন্ত দেখেছিলাম। কিন্তু একটা সময় আলিম ফাইনাল পরীক্ষার কিছুদিন আগে আমার এক স্যার (আতিক স্যার) আমাকে বললেন, যদি তোমার একমাত্র লক্ষ্য হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পড়া, তাহলে তোমার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রিপারেশন নেওয়ার দরকার নেই। তুমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তুতি নাও। তারপর আমার মনে হল আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে চাই। আর সেজন্যে আমি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রিপারেশন নেওয়া হলো। আর এই জার্নিতে অনেক সময় মনে হচ্ছিল আমি কি আদৌও পারব? কিন্তু আল্লাহর উপর ভরসা করে আমি সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছি। আর যখন আমি পরীক্ষা দিতে যাই তখন আমি দোয়া করছিলাম হে আল্লাহ তুমি সম্মান দেওয়ার মালিক আবার তুমি অপমান করার মালিক। আল্লাহ তুমি আমাকে সম্মানিত করিও। আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া। আর যখন রেজাল্ট দিল তখন আমার এক বন্ধুর ফোন দিয়ে রেজাল্ট দেখতেছিলাম তখন দেখি আমার নাম মোঃ আশিক মিয়া পিতা তোফাজ্জল হোসেন সবার উপরে এক নম্বর সিরিয়ালে দেখলাম।আর এই খুশির সংবাদটা আমি আমার আব্বু আম্মুকে জানাই। এটা আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ ছিল।
তিনি আরও বলেন, এই সফলতার পেছনে আমি একটা কথাই বলতে চাই আল্লাহর উপর ভরসা, ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম একজন মানুষকে সফল করতে পারে। আমি প্রস্তুতির জন্য প্রতিদিন ডায়েরিতে একটা প্ল্যান বা পরিকল্পনা লিখতাম। দিনে এত সময় পড়ালেখা করব। সেই সাথে দিনে কত সময় পড়ালেখা করলাম ও কত সময় অন্যান্য কাজে ব্যায় করলাম সেটাও লিখে রাখতাম। আর এই বিষয়টা আমাকে অনেক বেশি উপকৃত করেছে। পরিশেষে আল্লাহর রহমত, মা বাবার দোয়া, দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি এবং কঠোর পরিশ্রম আমাকে প্রথম হতে সাহায্য করে । আর এই সফলতা টুকু আমি আমার মা-বাবার জন্য উৎসর্গ করলাম।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১১ মে) বেলা ১২টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি ভবনে ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই ইউনিটে ধর্মতত্ত্ব ও ইসলাম শিক্ষা অনুষদভুক্ত তিনটি (আল-কোরআন, আল-হাদিস ও দাওয়াহ) এবং কলা অনুষদভূক্ত আরবি বিভাগে মোট ৩২০টি আসন রয়েছে।
মন্তব্য করুন: