মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সংঘর্ষে না জড়িয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের
  • যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
  • ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে অটোরিকশাচালকরা
  • ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন
  • ঢাকার ৫ এলাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
  • রাজধানীর বেশির ভাগ ফুটপাত দখলে, যানজটের পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনা
  • সম্পদের হিসাব দিতে আরও ১ মাস পাবেন সরকারি কর্মচারীরা
  • শপথ নিলেন নতুন সিইসি ও ৪ নির্বাচন কমিশনার
  • বঞ্চিত কর্মকর্তাদের গ্রেড-১ দেওয়া হবে
  • ৫ বিসিএসে ১৮ হাজার প্রার্থী নিয়োগ দেবে সরকার

একসময়ের গাছ কাটার প্রতিবাদী অধ্যাপক নিজেই কাটছেন গাছ

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
৪ জুন ২০২৪, ১৫:২১

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০ সালের ১২ ই জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কদ্বীপের ৫৬টি গাছ কাটা হয়। এর প্রতিবাদে ১৮টি গাছের পাশে খুঁটি পুতে তাতে সাদা কাপড় পেঁচিয়ে উপরের অংশে কালো কাপড় বেঁধে প্রতীকীভাবে গাছের মৃত্যুকে তুলে ধরেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সেদিন পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলন-এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালেয়ের নতুন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক।

কিন্তু গতকাল রবিবার (২ জুন) পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনের এই আন্দোলনকারী নিজেই নেতৃত্ব দিলেন ২০০ গাছ কাটতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রারের পাশে চলছে এই গাছ নিধনের কর্মযজ্ঞ। সেখানে নির্মাণ হবে কলা ও মানবীকি অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন।

গাছ কাটার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বাসভবন অবরোধ করলে শিক্ষার্থীদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তোমাদের এই গাছের প্রেম শুরু হইছে গত ৫-৭ বছর থেকে, এর আগে এগুলো ছিল না।’

তিনি আরো বলেন, 'আমাদের মাস্টারপ্ল্যান প্রয়োজন নাই, এটা তোমাদের প্রয়োজন। আমার ফ্যাকাল্টির শিক্ষকরা যদি রাজি থাকেন, তোমাদের এপ্রোভাল লাগবে না।' অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের এমন দ্বিচারী আচরনে বিস্মিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, বিবেচনা ছাড়া নিজের অনুষদের সুবিধার্থে মাস্টারপ্ল্যান লাগবে না বলে দিলো কিন্তু তিনি নিজেইতো একসময় মাস্টারপ্লানের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলন করেছিলেন। এখন কাউকে তোয়াক্কা না করে গাছকাটায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিষয়টি ক্যাম্পাসের প্রাণ-প্রকৃতি ও শিক্ষা পরিবেশ সম্পর্কে তাঁর উদাসীনতাকেই সামনে আনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, গাছকাটা হতে পারে কিন্তু পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। ভবনটি হচ্ছে লেকের পাড়ে সে ক্ষেত্রে বর্জ ব্যবস্থাপনা, লেকের পানি দূষণসহ নানা বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি, দাবি তুলেছি। ডিন মোজাম্মেল হক আমাদের মাস্টারপ্ল্যান লাগবে না বলে যে মন্তব্য করেছেন সেটা আসলে বিবেচনা প্রসুত কথা নয়। কারণ মাস্টারপ্লান না থাকলে আমাদের জাীনবযাত্রা এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। অপরিকল্পিতভাবে যে হারে গাছ কাটা হয়েছে একজন প্লানার কখনো তা করেতেন না।

 

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে গ্রীষ্মকালীন ও ঈদের ছুটি। বন্ধ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে গাছ কাটার মহোৎসবে মেতেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকাল ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা এক্সটেনশন ও নতুন প্রশাসনিক ভবনের পাশে কাটা হয় প্রায় দুই শতাধিক গাছ। অপরদিকে শিক্ষকরা সর্বসম্মতিক্রমে কলা অনুষদের পাশেই ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও তাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের পাশে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কেটে ফেলা গাছগুলোর ঠিক পাশেই অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের ’মেইন বার্ডস’ খ্যাত লেক।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর