প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২৪, ১৪:০৪
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আলীমুজ্জামান টুটুল বলেছেন, আমি অনেক বড় লোক না। আমি সাধারণভাবে জীবন যাপন করি। কিন্তু আমি চাই সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আর কিছু মানুষ এসব জনহিতকর কাজ সহ্য করতে পারে না, তারা বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দেয় এবং আমাকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করে। তারা যতই নিরুৎসাহিত করুক আমি যতদিন বাঁচব বা ক্যাম্পাসে আছি ততদিন ক্যাম্পাসে ভালো কাজ করে যাব।
মঙ্গলবার (৪ জন) দুপুরে তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট যেকোনো দল জাতীয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কোনো খেলায় যদি চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসতে পারে তাহলে তাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য আমি বিশেষ উপহারের ব্যবস্থা করবো, পুরষ্কৃত করবো।
আমি চাই যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রিকেট বা সব ধরনের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হয়। এই জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠান রয়েছে গ্রীন আর্কিটেক্ট এবং গ্রীন ডেভলপার। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমি সব সময় এদের পাশে থাকি বা ভবিষ্যতেও থাকব। কিছুদিন আগে ইবি ক্রিকেট টিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রানার্সআপ হয়ে এসেছে, তাদের পুরো টিমকে আমি আমার নিজস্ব অর্থায়নে ব্লেজার উপহার দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এবছরের আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ৩৬ টি বিভাগ অংশ নিয়েছিল তারমধ্যে ৭টি দলকে আমি জার্সি স্পন্সর করেছি। এছাড়া যে ২ টি দল ফাইনাল খেলেছে তাদেরকে গ্রীন আর্কিটেক্ট এর পক্ষ থেকে নতুন জার্সি উপহার দিয়েছি। এছাড়া চ্যাম্পিয়ন দলকে তাৎক্ষণিক গিয়ে ১০ হাজার টাকা প্রাইজমানি দিয়েছি।
প্রকৌশলী টুটুল বলেন, আমার কাছে কিছুদিন আগে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসেছিল একজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে। ওই মেয়ে শিক্ষার্থী ইবির মেয়েদের মার্শাল আর্ট (কারাতে) প্রশিক্ষণ দেয়। সে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত। সে বলেছিল যে ক্যাম্পাসের অনেক মেয়ে মার্শাল আর্টে আগ্রহী। তবে মেয়েদের প্রশিক্ষণ নিতে প্রতি শিক্ষার্থীদের ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হয়। আমাদের যে তিনটা হল আছে একেক হল থেকে প্রায় ১৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী। তাদের প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ হয় বা টাকা প্রয়োজন। টাকার অভাবের জন্য এই প্রশিক্ষণটা দিতে পারছিল না।আমি তাকে বলছিলাম যে মেয়েদের সেফটির জন্য বা কারাতে শেখার জন্য তোমার যতরকম সহযোগিতা লাগবে আমি তোমাকে সহযোগিতা দিব।
এভাবে আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করি যাচ্ছি যে প্রত্যেকটা জায়গায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা বা এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসে এগিয়ে যায়।
আগে আমি অফিসে শিক্ষার্থীদের বই উপহার দিতাম। সবাই আমার রুমে আসতো। বেশি গেদারিং হয়ে যায়। তাই আমি ক্যাম্পাসের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে ঘোষণা দিয়েছি যে যারা বিসিএস বা চাকরির পড়াশোনার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা যদি আমার কাছে আসে এবং তাদের দলনেতা বা সভাপতি, সেক্রেটারি তারা যত কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স চাইবে আমি তাদের সদস্যের তা উপহার দিব। তারা কুইজে অংশগ্রহণও করতে পারবে।
পাশাপাশি গরীব ছেলে মেয়ে বিশেষ করে যদি মেয়ে হয় তাহলে আমার কাছে সরাসরি আসতে হবে না। তাদের সংগঠনের মাধ্যমে আসলেও হবে। এছাড়াও সে যদি বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় চান্স পায়, অর্থের অভাবে রিটেনের জন্য বই কিনতে না পারে তাহলে সমস্ত বই কিনতে যে টাকা প্রয়োজন তা তাকে আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অর্থায়ন করবো। এভাবে যেখান থেকে যতটুকু পারি দিব।
আমি অনেক বড় লোক না। আমি সাধারণভাবে জীবন যাপন করি। কিন্তু আমি চাই সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আর কিছু মানুষ এসব জনহিতকর কাজ সহ্য করতে পারে না, তারা বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দেয় এবং আমাকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করে। তারা যতই নিরুৎসাহিত করুক আমি যতদিন বাঁচব বা ক্যাম্পাসে আছি ততদিন ক্যাম্পাসে ভালো কাজ করে যাব।
পাশাপাশি শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয় না, আমি আরও ১৮-১৯ টা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগিতা করে থাকি। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আমার যে যোগাযোগ আছে তাদের মাধ্যমে সহযোগিতা করে থাকি। আর আমার একটা বড় কাজ হচ্ছে এ পর্যন্ত আমি অন্তত ১২ লক্ষ গাছ লাগিয়েছি। এবছর ১৮ টা বিশ্ববিদ্যালয় আমার সাথে যারা কাজ করে। তাদের সবাইকে আমি গাছ উপহার দিব। তারা একটা করে স্টল দিবে। সেখান থেকে বিনামূল্যে গাছ উপহার দেয়া হবে। কেননা আমাদের সবারই গাছ লাগানো উচিত। বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে পরিবেশ ভালো রাখা যাবে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে।
মন্তব্য করুন: