প্রকাশিত:
১৯ জুন ২০২৪, ১৩:৩৯
ঈদুল আজাহার তিনদিনসহ মোট পাঁচদিনের টানা ছুটি শেষে বুধবার (১৯ জুন) থেকে খুলেছে সরকারি অফিস। ফাঁকা ঢাকার মতো প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়েও ছুটির পর প্রথম কার্যদিবস হলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতির হার কম, ঈদ আমেজ এখনও কাটেনি।
প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে কর্মদিবস শুরু করেছেন। ফলে সচিবালয়ে ঈদের আমেজ বিরাজ করছে।
বুধবার (১৯ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য অধিদপ্তর, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে দেখা যায়, সচিবালয় চত্বর, করিডোর ও প্রত্যেকের রুমে রুমে চলছে শুভেচ্ছা বিনিময় আর কোলাকুলি।
ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিল কম। এবার ঈদের তিনদিন ছুটির শুরুতে দুদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে টানা পাঁচদিন ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন কর্মজীবীরা। আর দুদিনের ঐচ্ছিক ছুটি যারা নিয়েছেন তারা এবার ছুটি কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন টানা সাতদিন। সঙ্গে পাবেন আরও দুদিন অর্থাৎ মোট নয়দিন। পাঁচদিনের ছুটি শেষে বুধবার যাদের কাজে যোগ দিতে হয়েছে তারা শুরুর দিন কাটিয়েছেন শুভেচ্ছা বিনিময় করে।
সচিবালয়ে প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল৷ গাড়ি পার্কিং করার জায়গাও ফাঁকা পড়ে আছে। ঈদের ছুটির পর যারা অফিসে এসেছেন সেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
এছাড়া সচিবালয়ে গাড়ি রাখার স্থানগুলোও অন্যান্য দিনের তুলনায় ফাঁকা। ৪ নম্বর ভবনের দক্ষিণ, ৬ নম্বর ভবনের উত্তর পাশের পার্কিংয়ের স্থানসহ বিভিন্ন জায়গা ফাঁকা ছিল। সচিবালয়ে লিফটগুলোর সামনে ভিড় ছিল না। সচিবালয়ে দর্শনার্থীর কক্ষটিও ছিল ফাঁকা।
এদিকে ঈদ পরবর্তী প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। এদিন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া প্রথম দিনে অফিসে এসেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রীসহ অনেকে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার অফিস খুলেছে। তবে অনেকেই দুদিন ঐচ্ছিক ছুটি নিয়ে টানা সাতদিনের সঙ্গে পাবেন আরও দুদিন অর্থাৎ মোট নয়দিন ছুটি উপভোগ করছেন। ঈদের পরে প্রথম কর্মদিবস মোটামুটি এমনই হয়ে থাকে। খুব একটা কাজ হয় না, আবার অনেকেই ছুটিতে থাকেন। যারা অফিসে এসেছেন তাদেরও গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। তাই আগামী রোববার থেকে সচিবালয়ের অফিস পুরোদমে শুরু হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, প্রায় অর্ধেক কর্মকর্তা-কর্মচারীই আজ আসেনি। আমরা যে কক্ষে বসি সেখানে চারজনের মধ্যে এসেছে দুজন। বেশির ভাগই ছুটিতে রয়েছেন। আমাদের অধিকাংশ কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন। আগামী রোববার থেকে অফিসে কর্মতৎপরতা বাড়বে। ঈদের ছুটির সঙ্গে অনেকে বাড়তি ছুটি নেওয়ায় অফিস সেভাবে জমে উঠেনি।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, ঈদের ছুটি শেষ করে অফিস করছি। বিশেষ কোনো কাজ না থাকায় ঐচ্ছিক ছুটির প্রয়োজন হয়নি।
তিনি আরও জানান, ঈদের পর অফিস করে বেশ ভালোই লাগছে। কর্মকর্তাদের উপস্থিতি কম হলেও যারাই এসেছেন সবার মধ্যে ঈদের আমেজ রয়েছে। অনেকেই শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৭ জুন) দেশে মুসলমানদের পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৬, ১৭ ও ১৮ জুন (রবি, সোম ও মঙ্গলবার) ঈদের ছুটি ছিলে। এর আগে ১৪ ও ১৫ জুন (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এবার ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা পাঁচদিন ছুটি ভোগ করেছেন। ছুটি শেষে বুধবার থেকে অফিস শুরু হয়।
মন্তব্য করুন: