প্রকাশিত:
৬ জুলাই ২০২৪, ১৫:৪৫
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, শ্যামপুর খাল ১০০ ফুট থাকলেও বাস্তবে রয়েছে আট ফুটের একটি নালা। কঠোরতার সঙ্গে আগামী মাস থেকে দক্ষিণের জিরানী, মান্ডা, শ্যামপুর ও কালুনগরের চারটি খাল দখলমুক্ত করা হবে, যদিও সেখানে অনেক প্রভাব চাপ রয়েছে।
এমন অনেক প্রভাবশালী রয়েছে যা খাল দখলমুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হবে।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘জলাবদ্ধতা নিরসন ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টিতে খাল পুনরুদ্ধারের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপে ডুরার সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোল্লার সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ডুরার সভাপতি ওবায়দুর মাসুম। সংলাপে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি ড. আদিল মুহাম্মদ খান।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, এখন সময় এসেছে, দখলের পরিবর্তে ত্যাগ করতে হবে। যারা এতোদিন দখল করেছেন, তারা এখন ত্যাগ করেন। আগামী প্রজন্মের জন্যও হলেও ত্যাগ করেন। তাদের জন্য সুন্দর একটা ঢাকা শহর আমরা বির্নিমাণ করতে চাই।
মেয়র বলেন, উচ্চ শিক্ষিতরা নদীর জমি দখল করে ১০ তলা বাড়ি বানিয়েছে। সেগুলো আমাদের উচ্ছেদ করতে হচ্ছে। কিন্তু তখনি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমাদের উপরেও তো অভিভাবক আছে। তাদের কাছ থেকে প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হচ্ছে। তবুও আপনাদের (সাংবাদিক) সরব ভূমিকায় সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আমরা খাল-নদীগুলো উদ্ধার করতে পারবো।
মেয়র দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ২০২৩ সালে যাত্রাবাড়ী সড়কটি ডিএসসিসির নিজস্ব অর্থায়ণে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঠিক করা হয়েছিল। অথচ গত তিনদিন আগে ওয়াসা কিছু না জানিয়ে বিনা অনুমতিতে আরসিসির সেই রাস্তা খনন করেছে। যা খুবই দুঃখজনক। টেকসই সমাধানে যাওয়া যাচ্ছে না এমন অনেক কারণে।
সংলাপে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, আমি জানি মেয়র মহোদয় খুবই শক্ত অবস্থান নেন। কিন্তু যারা যারা খাল দখল করেছেন- তারাও কিন্তু কম শক্তিশালী না। দখলদারদের নামগুলো দেখলেই বুঝবেন তারাও কতটা শক্তিশালী। সুতরাং এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে যে, আমরা উদ্ধার কাজটাও করবো, একই সঙ্গে স্থায়ী একটা সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এজন্য সরকারের কমিটমেন্ট দরকার। সমন্বয়হীনতার কারণে খাল উদ্ধার অসম্ভব।
তিনি বলেন, রামচন্দ্রপুর খাল নিয়ে খালি গল্পই শুনছি। সেখানে রামের বাইরে রামের একটা বোন সীতাও আছে। তার একটা বাড়িও আছে সেখানে। তিনি আবার গানও করেন। সেই সীতা নাকি আলাদাভাবে পানি উন্নয়ণের কাছ থেকে খালের জায়গায় ভবন নির্মাণের অনুমতিও নিয়েছেন। ফলে সাদিক অ্যাগ্রো উচ্ছেদ হওয়া নিয়ে খুশি হয়ে কোনো লাভ নেই, যদি খালটা কাজে না আসে।
তিনি আরও বলেন, একটা শহরে ১৪টার মতো সরকারের সেবা সংস্থা কাজ করে। সিটি করপোরেশন শুধু একাই সরকারের একটা সংস্থা নয়। ওয়াসা বলে তারা স্বাধীন, রাজউক বলে তারাও স্বাধীন। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হলো- রাজউক স্বাধীন সংস্থা হলেও সিটি করপোরেশনের নগরায়ণের পরিকল্পনা দেয় রাজউক। অথচ দুই সংস্থার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। এটি সাংঘর্ষিক নীতি বলে মনে করেন তিনি।
মন্তব্য করুন: