প্রকাশিত:
৭ জুলাই ২০২৪, ১৩:৫৭
যমুনা নদীর পানি কাজিপুর পয়েন্টে কমলেও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে স্থির রয়েছে। তবে পানি স্থির থাকলেও নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হচ্ছে। এখনো পানিবন্দী ৫৩৬২ পরিবার।
রবিবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের হার্ডপয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫১ মিটার। এই পয়েন্টের পানি বাড়ছে না।
অপরদিকে কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৩৪ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর ৬ ঘণ্টায় পানি কমেছে ২ সেন্টিমিটার বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানিতে ডুবেছে অনেক ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যায় ঘরবাড়ি ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও অন্যের বাড়ি সহ আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন অনেকে। গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে কাজীপুরে পানি কমলেও উপজেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চল খাসরাজবাড়ী, তেকানি, নিশ্চিন্তপুর ও চরগিরিশ এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের পাঁচ হাজার ৩৬২টি পরিবারের প্রায় ২৪ হাজার মানুষ।
বন্যা কবলিত হয়ে পড়া জেলার পাঁচটি উপজেলার ৪৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৬৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমিসহ অনেক তাঁত কারখানা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন কৃষক ও শ্রমিকেরা।
সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলী গ্রামের তাঁতশ্রমিক হাসান আলী বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ হলো তাঁত কারখানায় বন্যার পানি ঢুকেছে। কাজ করা যাচ্ছে না। মালিক কারখানা বন্ধ করে রেখেছে। রাস্তা-ঘাট, ঘরের মধ্যেও পানি উঠেছে।
একই গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, পানির অবস্থা খুব ভয়াবহ। বাড়িতে যাওয়ার উপায় নেই। ঘরের মধ্যে কোমরপানি। পরিবার নিয়ে বিপদে আছেন। ঘরে চাল আছে, রান্না করার জায়গা নেই। সংসারে যা ছিল সব পানিতে তলিয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাইয়ার সুলতানা জানান, সদর উপজেলায় ২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর জানান, এবারের বন্যায় ৬৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান বলেন, বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর ৫টি উপজেলায় ৯৫ টন চাল, ৫ লাখ টাকা, ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া ৫০০ টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ থাকলেও আরো নতুন বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন: