প্রকাশিত:
৯ জুলাই ২০২৪, ১৩:৩৮
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসসহ (বিসিএস) ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (বিপিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
ড্রাইভার আবেদ কুলি থেকে হয়েছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে প্রচার হওয়ার পর থেকেই মাদারীপুরে গ্রামের আলীশান বাড়ীতেও তালা ঝুলিয়ে রেখেছে আবেদ আলীর পরিবার। এলাকায় তিনি দানবীর, সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। নিজ বাড়ির আশেপাশে মানুষের পুরাতন বাড়ি, ফসলি জমি কিনেছেন শত শত কোটি টাকার। প্রশ্নফাঁসের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও অনেকে মানতে নারাজ তার কুকর্মের কথা। সোমবার ঢাকায় আটক হয়েছেন সিআইডির কাছে।
জানা গেছে, (বিপিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের নিজ বাড়ি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম বোতলা গ্রামে। তিনি তার নিজ নামে এই গ্রামে গড়ে তুলেছে বিলাসবহুল আলীশান বাড়ি ও মসজিদসহ সম্পদের পাহাড়। অবৈধ টাকা দিয়ে স্থানীয় মানুষের পুরাতন বাড়ি, ফসলি জমি কিনেছেন শত শত কোটি টাকার। নিজ বাড়ির পাশেই সরকারি জমি দখল করে তৈরি করেছেন গরুর ফার্ম রয়েছে এমন অভিযোগ।
গৌরনদীর খাঞ্জাপুরেও রয়েছে তার একটি বাড়ি। তিনি অবৈধ টাকার মালিক হয়ে পরিবার নিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ফ্লাটসহ একাধিক ভবন।
সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় তৈরি করেছেন সান মেরিনা নামে বিলাস বহুল হোটেল। এছাড়া পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করেন একাধিক দামি বিলাসবহুল গাড়ি। নামে বে-নামে রয়েছে কয়েক কোটি কোটি টাকার শত শত শতাংশ জমি।
বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসসহ বিভিন্ন দপ্তরে করতেন দালালী। দেশের সুনামধন্য রাজনৈতিক ব্যক্তি সহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলে নিজ ফেইসবুক আইডিতে করেন ভাইরাল এবং সেই ছবি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের দেখিয়ে সুবিধা নেয়ারও রয়েছে একাধিক অভিযোগ। আবেদ আলীর ছেলে ঢাকা উত্তর ছাত্রলীগের ত্রান বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সোহান রহমান। তিনি কোটি টাকার গাড়ি ব্যবহার করছেন। সবশেষ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন আবেদ আলী। এবং মাদারীপুর জেলা প্রশাসক বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে ইতিমধ্যে।
কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, ছোট বেলায় আবেদ আলীর পরিবারের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। দুবেলা দুমুঠো ভাত খেতে পারতো না তার পরিবারের সদস্যরা। অভাবের কারনে আবেদ আলী ৫/৬ বছর বয়সেই ঢাকা চলে যান। এরপরে আবেদ কুলি গিরি করেছেন, রিক্সা চালানোসহ শ্রমিকের কাজ করেছেন। পরবর্তীতে ড্রাইভার হিসেবে চাকুরী করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করতেন। এলাকার মানুষকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করতেন। বাড়িতে নির্মাণ করেছেন সুন্দর একটি মসজিদ। এলাকাবাসী এখন আবেদকে দানশীল ব্যক্তি হিসেবে জেনে। আগামীতে ডাসার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রশ্ন ফাঁস ও অবৈধ সম্পদের কথা শুনে আমরা অবাক।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, ইতিমধ্যে আমরা আবেদ আলীকে নিয়ে খোঁজ খবর শুরু করেছি বিভিন্ন দপ্তরে। তার বৈধ কোন সম্পদ আছে কিনা এবং সেগুলোর সঠিকভাবে ক্রয় ও কর দেয়া হয়েছে কিনা তার খবর নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আদালত থেকে যদি তার বিষয়ে কোন আদেশ আসে তা হলে আমরা তা নিয়ম অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবো।
মন্তব্য করুন: