প্রকাশিত:
১৪ জুলাই ২০২৪, ১১:৫১
আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত শেষে গত শুক্রবার থেকে জাতীয় গ্রিডে আবার এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে। এতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প-কারখানা, সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও আবাসিক সংযোগে গ্যাসের চাপ বেড়েছে। শিল্প ও আবাসিক গ্রাহকরা বলছেন, পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও গত কয়েক দিনের তুলনায় গ্যাসের চাপ বেড়েছে।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলেছেন, শুক্রবার সকাল থেকে পাইপলাইনে সরবরাহ শুরু হলেও লাইনের দৈর্ঘ্যের কারণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুরোদমে গ্যাস পৌঁছতে কিছুটা সময় লেগেছে।
তবে শুক্রবার রাতের মধ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে গ্যাস সরবরাহ বাড়ায় সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। বর্তমানে জাতীয় গ্রিডে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।
জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ঘণ্টাপ্রতি উৎপাদন চিত্রে দেখা গেছে, গ্রিডে এলএনজির সরবরাহ বাড়ায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন এক দিনের ব্যবধানে প্রায় এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বেড়েছে। (১৩ জুন) শনিবার বিকেল ৩টার দিকে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন হয় পাঁচ হাজার ৩৮১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
এক দিন আগে গত শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয়েছিল চার হাজার ১৯১ মেগাওয়াট। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ায় কমেছে লোডশেডিং।
পিজিসিবির তথ্যে আরো দেখা গেছে, শনিবার বিকেল ৩টার দিকে ১৩ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১৩ হাজার ৪৮১ মেগাওয়াট। ওই সময় লোডশেডিং ছিল মাত্র ২০৯ মেগাওয়াট।
গ্যাস ট্রান্সমিশন কম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন ডিভিশন) মো. নজরুল ইসলাম (১৩ জুন) শনিবার বলেন, ‘শুক্রবার রাত থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশের সব জায়গায় গ্যাস সরবরাহ বেড়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা দীর্ঘ পাইপলাইনের কারণে গ্যাসের প্রেসার উঠতে কিছুটা সময় লেগেছিল।’
পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘এখন জাতীয় গ্রিডে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে সারা দেশের গ্যাসসংকট অনেকটাই কেটে গেছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সরবরাহ বন্ধ থাকা এলএনজি টার্মিনালটিও (সামিটের এফএসআরইউ) আগামী সপ্তাহে চালু হবে।
’
চীনা কম্পানির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গত ৯ জুলাই কর্ণফুলী টানেল ও কাফকোর মধ্যবর্তী জায়গায় ড্রিল করার সময় দুর্ঘটনাক্রমে ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইন ছিদ্র হয়ে যায়। এতে ওই লাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। পাইপলাইন মেরামত শেষ করে গত শুক্রবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে গ্যাস ‘কমিশনিং’ শুরু হয়।
গ্যাস সঞ্চালনকারী প্রতিষ্ঠান গ্যাস ট্রান্সমিশন কম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) দাবি, অবকাঠামোজনিত কাজের বিষয়ে তাদের আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শুক্রবার বলেছেন, সব পাইপলাইনের ম্যাপ সঙ্গে রাখতে হবে। ম্যাপ হাতে থাকলে এ রকম দুর্ঘটনা ঘটবে না।
মন্তব্য করুন: