প্রকাশিত:
১৪ জুলাই ২০২৪, ১৮:১৭
নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম পাহাড় সমান সম্পদের মালিক হয়েছেন। কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোণা ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী চাট্টা, ছাত্তা গ্রামে গড়ে তুলেছেন প্রায় দেড় কোটি টাকার মূল্যের আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি।
২০১৯ সালে নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ে যোগদান করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের লোক পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ে ইস্টিমেটর হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। জেলাজুড়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সকল কাজে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছেন পাহাড় সমান সম্পদের মালিক। সরেজমিনে কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোণা ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী চাট্টা, ছাত্তা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে প্রাসাদতুল্য আলিশান ডুপ্লেক্স ভবন। স্থানীয়দের মতে এই প্রাসাদতুল্য আলিশান ডুপ্লেক্স ভবনটি নিমার্ণ করতে ব্যয় হয়েছে দেড় কোটি টাকার অধিক। বাড়িটির কাজ দেখলে যে কারো নজর কাড়ে। আলিশান বাড়িটি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে রয়েছে নানা গুঞ্জন। প্রতিবেশী ইসলাম উদ্দিন জানান, জহিরুল ইসলামের ছোট বেলায় তার বাবা মারা যান। তিনি জানান, দুই বোন-মা ও স্ত্রীকে নিয়ে নেত্রকোণা জেলা শহরের অভিজাত এলাকায় তিনি থাকেন। মাঝে মধ্যে তিনি এখানে আসলেও এক রাতের অধিক থাকেন না। এছাড়াও তিনি কেন্দুয়া শহরে ৬ শতাংশ এবং নেত্রকোণা শহরে কাটলী এলাকায় ৩ শতাংশ জায়গা কিনেছেন বলে শুনেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানান, এক সময় তেমন কিছু না থাকা জহিরুল ইসলাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাকরি পাওয়ার পর যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান। নরসিংদীতে গার্মেন্টস শিল্পেও নাকি তার রয়েছে বিশাল অংশিদারিত্ব। গত কয়েক বছরে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। তার অঢেল সম্পদ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর স্থানীয় ঠিকাদার সৈয়দ মিজানুর রহমানের নিকট হতে গভীর নলকুপের কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার লিখিতভাবে অভিযোগ রয়েছে। এবিষয়ে আটপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, মামলার কোনো কাগজ-পত্র তিনি এখনো পাননি। সান্দিকোণা ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী চাট্টা, ছাত্তা গ্রামে আলিশান বাড়িটি নির্মাণ করতে কতো টাকা ব্যয় হয়েছে জানতে চাইলে সাক্ষাতে কথা বলবো বলেই ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নেত্রকোণা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মশিউর রহমান জানান, জহিরুলের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে তার জানা নাই। তবে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে মিজানুর রহমান নামক একজন ঠিকাদার তার নিকট থেকে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছে মর্মে প্রধান প্রকৌশলী বরাবর অভিযোগ করেছেন। ময়মনসিংহ বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশল প্রকৌ: মো: আবদুল আউয়াল জানান, আটপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের বিষয়ে তিনি অবগত এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষও এবিষয়ে অবগত। তার বিরুদ্ধে অফিসিয়ালি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন: