শনিবার, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া
  • নাসির উদ্দীনকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন
  • আমরা এক পরিবার, কেউ কারো শত্রু হবো না
  • শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
  • আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উদ্যোক্তা নয় চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে
  • নির্বাচনকালে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা চায় ইসি
  • রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার না চায় তাহলে এখনই নির্বাচন দেওয়া হবে
  • বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে ইসি অনুসন্ধান কমিটি
  • ঢাকার যে ৫ স্থানে আজ সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ
  • রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ

এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় আম গাছ ঠাকুরগাঁওয়ে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
২৩ জুলাই ২০২৩, ১৪:৩১

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নয়াপাড়ার গ্রামে রয়েছে প্রায় ২০০ বছর বয়সী এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম একটি আম গাছ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন একটা বিশালাকৃতির ঝাউগাছ।

সবচেয়ে বড় আকর্ষণ গাছের ডাল। এই আমগাছটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় আমগাছ হিসেবে পরিচিত।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সীমান্ত ইউনিয়ন হরিণমারীর নয়াপাড়ার গ্রামে রয়েছে এ আমগাছ।

গাছের ডালগুলো কাণ্ড থেকে বেরিয়ে একটু ওপরে উঠেই মাটিতে নেমে গেছে। তারপর আবারও উঠেছে ওপরের দিকে। দেখতে অনেকটা টেউয়ের মতো। আবার কাণ্ড থেকে বের হয়েছে ২০টি শাখা। শাখাগুলোর দৈর্ঘ্য ৪০ থেকে ৫০ ফুট। গাছের প্রতিটি ডালে অনায়াসে হাঁটাচলা ও বসা যায়। ডালগুলো একেকটা মাঝারি সাইজের আমগাছের মতো।

জানা গেছে, আম গাছটির বর্তমান মালিক দুই ভাই সাইদুর রহমান ও নূর ইসলাম। তারাও সঠিক বলতে পারেন না, ঠিক কবে গাছটির চারা রোপণ করা হয়েছিল। তাদেরও ধারণা প্রায় ২০০ বছর হবে গাছটির বয়স।

উপমহাদেশ জুড়ে সূর্যপুরী জাতের এত বড় আমগাছ আর নেই। ফলে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় আম গাছটি হওয়ায় প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত দর্শনার্থী দেখতে আসেন এই গাছটি। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি থাকে বেশি।

আম গাছের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, তিন বিঘা জায়গাজুড়ে গাছটির অবস্থান। গাছটি আমার বাবার দাদার দাদা লাগিয়েছিলেন বলে শুনেছি। এর বয়স আনুমানিক ২০০ বছর হবে। প্রতিজনের কাছ থেকে আমরা ৩০ টাকা করে নেই। টিকিট বিক্রি করে যা পাই, তা দিয়ে আমরা দুই ভাই মিলে গাছটির রক্ষণাবেক্ষণা পরিচর্যা করি।

গাছের মালিক নুর ইসলাম বলেন, গাছের বয়স বেশি হলেও প্রতিবছরে এই গাছে অনেক আম ধরে। অন্য আমের তুলনায় এই আমের দাম বেশি। অনেক সুস্বাদু। গাছটি যাতে ভালো থাকে এর জন্য নিয়মিত স্প্রে ও পরিচর্যা করা হয়। আমের মৌসুমে যারা আমগাছ দেখতে আসেন তারাই আবার এই গাছের আম কিনে নিয়ে যায়। আমের মৌসুমে গাছের পাশেই তা বিক্রি করা হয়। আম গাছ দেখতে প্রায় প্রতিদিনই গাছের তলে ভিড় জমায় মানুষজন।

রাজশাহী থেকে আসা মামুনুর রশিদ জানান, আমি এই প্রথম রাজশাহী থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে আসছি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিসের কাজে। তবে এখানে এসে জানতে পারলাম এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম আম গাছ ঠাকুরগাঁওয়ে আছে। তাই নিজের চোখে দেখার জন্য ছুটে আসি আমগাছ দেখতে। তবে এখানে এসে আমগাছ দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির সেরা নেয়ামত এটি।

নাটোর থেকে আসা আব্দুল হামিদ জানান, আমি ঠাকুরগাঁওয় এসেছি আমার এক অফিসের কাজে এখানে এসে জানতে পারি এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম আমগাছ আছে। তাই অফিসে সকল স্টাফদেরকে নিয়ে আম গাছ দেখতে ছুটে আসলাম। এই প্রথম এত বড় আমগাছ আমি দেখতেছি এত গাছ দেখছি তবে এত বড় আম গাছ কখনো দেখিনি। গাছটা দেখে মন ভরে গেল। আমাদের দেশে এত সুন্দর আর এত বড় আমগাছ আছে তা আমরা অনেকেই জানি না।

দিনাজপুর থেকে আসা সুমাইয়া ইসলাম বলেন, অনেক দিন ধরে গাছটি দেখার ইচ্ছা ছিল। নানা কারণে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। আজ আসার পর দারুণ লাগছে। আমার একটি স্বপ্ন ছিল কবে গাছটি দেখব। অবশেষে গাছটি দেখার আশা পূরণ হলো। আমি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় আম গাছ দেখতে পেরেছি।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমাদের হরিণমারীতে যে আমগাছটি রয়েছে, তা আমাদের জন্য গৌরবের। প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে গাছটি। আমরা সরকারের তরফ থেকে এটাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করছি। আর গাছটি কীভাবে আরও বেশি দিন বেঁচে থাকে, সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর