প্রকাশিত:
২৮ জুলাই ২০২৪, ১৬:৫৫
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার জেরে দশ দিন বন্ধ রাখার পর মোবাইল ইন্টারনেট খুলে দিল সরকার।
রোববার (২৮ জুলাই) বিকাল ৩টা থেকে মোবাইল গ্রাহকরা তাদের ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ ফিরে পেতে শুরু করেন। তবে প্রথম অবস্থায় গতি অনেকটাই কম বলে ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন।
এদিন সকালে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ-অ্যামটবের সঙ্গে এক বৈঠকের পর টেলিকম ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মোবাইল ইন্টারনেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “আজ আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, আজ বিকেল ৩টায় মোবাইল নেটওয়ার্কের ফোরজি কানেক্টিভিটি পুনঃস্থাপন করা হবে। আশা করছি, আজ বিকেল ৩টা থেকে পুনরায় সংযোগ করতে পারব।”
মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকরা বিভিন্ন ডেটা প্যাকেজ কিনে ব্যবহার করতে না পারায় যে ক্ষতির মুখে পড়েছেন, সে কথাও স্বীকার করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মোবাইল ইন্টারনেট গ্রহাকরদের প্রত্যেকে তিন দিনের জন্য ৫ জিবি ডেটা বোনাস হিসেবে পাবেন।
দেশের চার মোবাইল অপারেটরের পাশাপাশি এমএফএস কোম্পানি বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় এবং বিটিআরসি ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিতি ছিলেন ব্রিফিংয়ে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৭ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে পরদিন রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সেদিন মহাখালীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনে আগুন দেওয়া হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়কের ওপর থাকা ইন্টারনেট সেবাদাতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তার। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কয়েকটি ডেটা সেন্টারও।
সে কারণেই সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায় বলে প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য।
মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মোবাইলে আর্থিক লেনদেন, বিদ্যুৎ-গ্যাসের প্রিপেইড কার্ড রিচার্জ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। কোথাও কোথাও ব্যাংকের এটিএম বুথও বন্ধ হয়ে যায়।
ইন্টারনেট না থাকায় স্থবির হয়ে পড়ে ই-কমার্স, পোশাক খাতসহ বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য, বন্ধ থাকে বন্দরের কার্যক্রম। ইন্টারনেটভিত্তিক সব ধরনের সংবাদ সেবাও অচল হয়ে পড়ে।
সারাদেশে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েনের পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি শান্ত হতে থাকে। ২২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ব্যবসায়ীরা। সেখানে তারা ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা চালুর ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
এরপর ২৩ জুলাই রাতে অগ্রাধিকার বিবেচনা করে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা ফেরে। পরদিন রাতে সারা দেশে বাসাবাড়িতেও ব্রন্ডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা সচল হয়, যদিও স্বাভাবিক গতি না ফেরায় গ্রাহকরা সন্তুষ্ট নন।
মন্তব্য করুন: