প্রকাশিত:
২৯ জুলাই ২০২৪, ১৬:২০
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) শৃঙ্খলা কমিটি সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফাঁস হওয়া নথির বরাত দিয়ে গতকাল রোববার (২৮ জুলাই) দেশটির একাধিক গণমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
সিদ্ধান্তটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে জ্যাকব জুমার বিষয়ে দলের শৃঙ্খলা কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় তাঁর বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
এ–সংক্রান্ত ফাঁস হওয়া নথিপত্র হাতে পেয়েছে এএফপি। এতে লেখা আছে, ‘অভিযুক্ত সদস্যকে এএনসি থেকে বহিষ্কার করা হলো। ২১ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত সদস্যের ন্যাশনাল ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে আপিল করার সুযোগ আছে।’
নথিতে ২৯ জুলাই তারিখ উল্লেখ করা আছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে নবগঠিত রাজনৈতিক দল উমখুনটো উই সিজকে (এমকে) সমর্থন দেন জ্যাকব জুমা। গত জানুয়ারিতে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস জুমার সদস্যপদ স্থগিত করে।
গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এএনসির কিছু ভোট এমকেতে চলে যায়। নির্বাচনে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এমকে তৃতীয় হয়। জুমা এখন দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ৪০০ আসনবিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে জুমার দলের ৫৮টি আসন আছে।
মে মাসে অনুষ্ঠিত ভোটে এএনসি ৪০ শতাংশ ভোট পেতে সক্ষম হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে গত তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি এবারই সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছে।
১৯৫৯ সালে কিশোর বয়সী জুমা এএনসির নবীনদের শাখায় যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে দলটির সঙ্গে যুক্ত হন।
২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জ্যাকব জুমা। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ২০১৮ সালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। তাঁর দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী সিরিল রামাফোসা তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ৮২ বছর বয়সী এ নেতার প্রতি এখনো উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাজনৈতিক সমর্থন আছে। এমনকি এএনসির কিছু অংশের মধ্যেও স্পষ্টভাষী জুমা জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন।
২০২১ সালে জুমার ১৫ মাসের কারাদণ্ড হয়। নিজের শাসন মেয়াদে হওয়া আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তে নিযুক্ত থাকা একটি প্যানেলকে জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এই সাবেক প্রেসিডেন্ট। এরপরই তাঁকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জুমার কারাদণ্ড হওয়ার পর অনেকে ভেবেছিলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটতে যাচ্ছে।
জুমা কারাবন্দী হওয়ার পর ব্যাপক সহিংসতা শুরু হয়, যা দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের অবসানের পর হওয়া সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা। এ সহিংসতায় ৩৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন।
জুমা মাত্র দুই মাস কারাগারে ছিলেন। স্বাস্থ্যসংক্রান্ত জটিলতার কারণে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর রামাফোসা তাঁর সাজা কমিয়ে দেন।
২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নয় বছরের শাসন মেয়াদে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিতে জুমা কেন্দ্রীয়ভাবে ভূমিকা পালন করেছেন।
মন্তব্য করুন: