প্রকাশিত:
৩ আগষ্ট ২০২৪, ১২:৫১
ঘন জঙ্গলে গাছের সঙ্গে শিকলে বাঁধা ছিলেন এক নারী। নেই পানি, খাবার। তিনি ক্ষুধা–তৃষ্ণা–ভয়ে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। এরপরও বাঁচার জন্য চিৎকার করছিলেন। চিৎকার শুনে তাঁর হদিস পান এক রাখাল। পরে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় ওই নারীকে।
ঘটনাটি ভারতের মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গ জেলার জঙ্গলে। ললিতা কায়ি (৫০) নামের ওই নারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
দিন সাতেক আগে উদ্ধার করা হলেও এক মার্কিন নাগরিক ভারতের একটি ঘন জঙ্গলে এসে কীভাবে শিকলে আটকা পড়লেন? কে তাঁকে আটকে রাখলেন? কেনই–বা আটকে রাখলেন? এসব নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে।
উদ্ধার করার সময় ললিতা ভীষণ দুর্বল ছিলেন। তাই তাৎক্ষণিক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তী সময়ে ললিতার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) তাঁকে একটি মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছে পুলিশ। তাতে পুলিশ জানিয়েছে, ললিতা তাঁর স্বামীর সঙ্গে জঙ্গলে গিয়েছিলেন। এরপর স্বামী তাঁকে শিকলে আটকে রেখে পালিয়ে যান। ক্ষুধা–তৃষ্ণায় যাতে তিনি মারা যান, সেটাই ছিল তাঁর স্বামীর উদ্দেশ্য। পুলিশের কাছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন ললিতা।
ললিতার পলাতক স্বামীকে খুঁজছে পুলিশ। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে তামিলনাড়ুতে চলছে অনুসন্ধান। তবে ললিতাকে উদ্ধার করার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও ওই ব্যক্তির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এমনকি ললিতার শিকলবন্দী হওয়ার ঘটনার আসল কারণও জানা যায়নি।
গত শনিবার ঘন জঙ্গলে ললিতার কান্নার আওয়াজ পান পান্দুরাং গওকার নামের এক রাখাল। বিবিসি মারাঠিকে তিনি বলেন, জঙ্গলে গরু চরাতে গিয়েছিলেন তিনি। তখন নারীকণ্ঠে জোর চিৎকার শুনতে পান। ওই রাখাল বলেন, ‘পাহাড়ের ধারে জঙ্গল থেকে চিৎকার ভেসে আসছিল। সেখানে গিয়ে দেখি, গাছের নিচে এক নারী চিৎকার করছেন। তাঁর পায়ে শিকল বাঁধা ছিল। তিনি রীতিমতো পশুর মতো চিৎকার করছিলেন। তখন আমি গ্রামের লোকজনকে ডেকে আনি। স্থানীয় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।’
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা ললিতার মার্কিন পাসপোর্ট পেয়েছেন। সেই সঙ্গে ললিতার একটি ভারতীয় আধার কার্ড পাওয়া গেছে। তাতে লেখা আছে, তাঁর বাড়ি তামিলনাড়ুতে। তিনি একজন নৃত্যশিল্পী ও যোগব্যায়াম অনুশীলনকারী। থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে। বছর দশেক আগে যোগব্যায়াম শিখতে ভারতের তামিলনাড়ুতে এসেছিলেন ললিতা।
তামিলনাড়ুতে স্বামী সতীশের সঙ্গে ললিতার দেখা হয়। তবে পুলিশ ধারণা করছে, তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতেন না। তবে রহস্যের কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এখন পুলিশ বলছে, ললিতার কাছ থেকে উদ্ধার করা মুঠোফোন, ট্যাবলেট কম্পিউটার থেকে ক্লু খোঁজার চেষ্টা করছে তারা।
মন্তব্য করুন: