সোমবার, ২৫শে নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন
  • ঢাকার ৫ এলাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
  • রাজধানীর বেশির ভাগ ফুটপাত দখলে, যানজটের পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনা
  • সম্পদের হিসাব দিতে আরও ১ মাস পাবেন সরকারি কর্মচারীরা
  • শপথ নিলেন নতুন সিইসি ও ৪ নির্বাচন কমিশনার
  • বঞ্চিত কর্মকর্তাদের গ্রেড-১ দেওয়া হবে
  • ৫ বিসিএসে ১৮ হাজার প্রার্থী নিয়োগ দেবে সরকার
  • সিইসিসহ নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শপথ দুপুরে
  • ঢাকার বাতাস আজ ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, দূষণের শীর্ষে লাহোর
  • বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটেনের রাজা-রানি

সুনামগঞ্জের সীমান্তে ভারতীয় হাতির হানা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
৩ আগষ্ট ২০২৪, ১৮:২৯

ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে সুনামগঞ্জ সীমান্তে হানা দিয়েছে ভারতীয় হাতি। স্থানীয় কৃষকদের ফসল, ঘরবাড়ি ও জানমালের ক্ষতি করছে এই হাতিগুলো। এতে গত এক মাসে অর্ধকোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বন বিভাগের লোকজনকে জানানোর পরও এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা জানান, সীমান্ত এলাকায় এক সময় ঘন বন জঙ্গলে শুধু হাতি নয়, নানা ধরনের বন্যপ্রাণী নিরাপদে আশ্রয় নিত। সেই আবাস্থল দিনদিন উজাড় হচ্ছে। এ ছাড়াও ভারত সীমান্তে হাতিদের বিচরণস্থল বন জঙ্গল বিলীন করে দেওয়ায় হাতির উপদ্রব বেড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে। এ দিকে সুনামগঞ্জ বনবিভাগ তাদের মালিকানাধীন জায়গায় নতুন করে বনায়নও করছে না।

স্থানীয়রা আরো জানান, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি ও নভেম্বরে মেঘালয় রাজ্যের গুমাঘাট থেকে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী যাদুকাটা হয়ে সাত থেকে আটটি বন্যহাতি বাংলাদেশ সীমান্তে এসেছিল। উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাহারাম বড়গোপ, আনন্দপুর, কড়ইগড়া গ্রামের কৃষকদের বোরো জমিসহ জঙ্গলের গাছ-গাছালি নষ্ট করে তারা। ২০২৩ সালে ও চলতি বছরের ২০২৪ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়েরগড় বর্ডার হাট এলাকা, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচটি হাতি এবং ১৬-১৭ জুলাই ও ২৭-২৮ জুলাই দশঘর এলাকায় ভারতীয় ১০-১২ হাতি এসে ধানের জমি, আখ ক্ষেত, কাঁঠাল বাগান, বীজতলাসহ ফসলের ক্ষেত নষ্ট করে। হাতির আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষার্থে গ্রামবাসী রাতে ঘরের সামনে আগুন জ্বালিয়ে ও অনেকে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন।

তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের দশ ঘর গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল্লাহ, বাবর, কামাল মিয়া, হেলাল মিয়া, ছোট্ট আবু, চাঁন মিয়া, রহিম মিয়া জানান, ধান ক্ষেত, কারো আখ ক্ষেত কারো কাঠাল, আখ ক্ষেত, আম গাছ, সবজি বাগানসহ বিভিন্ন গাছ পালার নষ্ট করেছে হাতি। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ‘বিকেল বেলায় ভারতের অংশে হাতির পালের ডাক শোনা যায়। হাতির আক্রমণের আশংকায় উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় থাকি সারাক্ষন।’

সুনামগঞ্জ বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর ও ধর্মপাশায় বনবিভাগের প্রায় ১৮ হাজার একর জঙ্গল রয়েছে। এর বাইরেও বিভিন্ন এলাকায় কান্দা শ্রেণির কিছু প্রাকৃতিক জঙ্গল আছে।

বাংলাদেশ সীমান্তের পাশাপাশি ভারত সীমান্তে পাহাড় ও বন জঙ্গল কেটে রাস্তাঘাট ও স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। এ কারণে বন্য প্রাণীরা বাস্তুসংস্থান হারিয়ে জনপদে এসে হানা দিচ্ছে।

সীমান্ত এলাকায় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাদুকাটা নদীর পশ্চিমে বড়গোপ টিলা (বারেকটিলা) একসময় বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য ছিল। কিন্তু দিনদিন বন্যপ্রাণীর আশ্রয়স্থল বন জঙ্গল কমছে। সরকার বনায়নের জন্য বনবিভাগকে নির্দেশনা দিলেও বন সৃজন করা তো দূরের কথা তাদের উদাসীনতায় স্থানীয় মানুষজন বন-জঙ্গল কেটে সাবাড় করে ঘর-বাড়ি ও স্থাপনা তৈরি করছে, কাটা হচ্ছে বাগান, সরকারি জমিতে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিলেও বনবিভাগ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যার ফলে বন্যপ্রাণীরা বাস্তুসংস্থান হারিয়ে এখন ঘন ঘন উপদ্রব করছে।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা জামিল মিয়া জানান, মানুষ যেটাকে উপদ্রব বলছে, ‘সেটা আসলে উপদ্রব নয়, বরং বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল বিনষ্টের কারণেই এই সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ সীমান্তেই নয়, ভারত সীমান্তেও উজাড় হচ্ছে বন-জঙ্গল। এ কারণে হাতির আক্রমণের শিকার হচ্ছি।’

সুনামগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন জানান, সীমান্তের যে জায়গাতে পাহাড়ি হাতির উপদ্রব সেই জায়গা বনবিভাগেরই। স্থানীয়রা যাতে হাতির দলকে আক্রমণ না করে, সেজন্য সতর্কতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে আমাদের লোকজন। এ ছাড়াও বনবিভাগ বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল সুরক্ষার পাশাপাশি বনায়নের জন্যেও কাজ করছে।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর