প্রকাশিত:
৮ জুন ২০২৩, ১৬:৫০
অর্পিত সম্পত্তি আইনের ৯, ১৩ ও ১৪ ধারা চ্যালেঞ্জ করে করা দুটি রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আইন অনুযায়ী অর্পিত সম্পত্তি সংক্রান্ত যে কোনো মামলার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালেই হবে। পাশাপাশি অর্পিত সম্পত্তি লিজ প্রদান ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ক্ষমতা বহাল রইল।
বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
রায়ে বলা হয়েছে, অর্পিত সম্পত্তি আইনের ৯, ১৩ এবং ১৪ ধারা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী নয়। আইন অনুযায়ী অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে যে কোনো মামলার বিচার এ সংক্রান্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হবে। অন্য সব আদালতে চলমান সব মামলা বাতিল বলে গণ্য হবে। অর্পিত সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকবে এবং জেলা প্রশাসক প্রয়োজনে লিজ দিতে পারবেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, হাইকোর্টের রায়ের ফলে অর্পিত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও লিজ দেওয়ার ক্ষমতা জেলা প্রশাসকদের হাতেই বহাল থাকছে এবং এ সংক্রান্ত মামলা কেবল অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালেই দায়ের করার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালে চট্টগ্রামের শ্যামল কুমার রায়, সিঙ্গা রায় ও মশিয়ার রহমান অর্পিত সম্পত্তি আইনের তিনটি ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৃথক রিট দায়ের করেন। রিটে জেলা প্রশাসকরা অর্পিত সম্পত্তি লিজ দিতে পারে কি-না তারও বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানিতে আইনি ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে ৩ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ওই দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে তা খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় যারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) থেকে পালিয়ে ভারতে যান, তাদের সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে শত্রু সম্পত্তিকে অর্পিত সম্পত্তি করা হয়। এসব সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০০১ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার অর্পিত সম্পত্তি আইন করলেও তা পরে স্থগিত করে বিএনপি সরকার। এরপর ২০১২ সালে ওই আইন ফের পুনর্বহাল করে বর্তমান সরকার।
মন্তব্য করুন: