প্রকাশিত:
৮ আগষ্ট ২০২৪, ২১:৩৭
শপথ নিল শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এতে এই প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের পাশাপাশি থাকছেন আরও ১৬ জন উপদেষ্টা। তবে ঢাকায় না থাকায় ৩ জন উপদেষ্টা এদিন শপথ নিতে পারেন নি।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টার পর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নেন ড. ইউনূস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। আর উপদেষ্টারা পাবেন মন্ত্রীর পদ মর্যাদা।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের শুরুতে সাম্প্রতিক ছাত্র জনতার গন আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ১ মিনিটের নিরবতা পালন করা হয়।
পরে এ সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, পরিবেশকর্মী ও আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।
এছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদে আরও থাকছেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল হাসান আরিফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফরিদা আখতার, , হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আ.ফ.ম খালিদ হাসান, গ্রামীন ব্যাংকের সাবেক এমডি নুরজাহান বেগম এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষক শারমিন মুরশিদ।
সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদিপ চাকমা, চিকিৎসক বিধান রঞ্জন রায় এবং মুক্তিযোদ্ধা ফারুকী আযম ঢাকায় না থাকায় তারা শপথ নিতে পারেন নি।
গত ৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে তাঁর টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গত তিনদিন দেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না। ফলে ঢাকাসহ সারা দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশজুড়ে সহিংসতায় অনেকেই মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ড. ইউনূস বৃহস্পতিবারই দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনি বলেন, ‘সরকার বলে একটা জিনিস আছে, কিন্তু মানুষের আস্থা নেই। যেখানেই সুযোগ যায়, সেখানেই শোষণ হয়। এটা সরকার হতে পারে না। নতুন করে যে সরকার হবে, তা মানুষকে রক্ষা করবে। মানুষের আস্থাভাজন হবে। তাহলে মানুষও আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে।’
এই নোবেলজয়ী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি পরিবার। আমরা একসাথে চলতে চাই।’
এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাঘাত ঘটছে, হামলা হচ্ছে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘এগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ। আমাদের কাজ এগুলো রক্ষা করা। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসা আমাদের কাজ। আমাদের যাত্রার শত্রু এসব ষড়যন্ত্র।’
‘আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন হতে হবে যাতে করে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি।’
ইউনূস বলেন, ‘আমার ওপর আস্থা রেখে ছাত্ররা আমাকে আহ্বান জানিয়েছে, আমি সাড়া দিয়েছি। আমার ওপরে বিশ্বাস ও ভরসা রাখুন, তাহলে দেশের কোথাও কোনো জায়গায় হামলা হবে না। আমার কথা যদি আপনারা না শোনেন তাহলে আমাকে বিদায় দেন। প্রয়োজন মনে হলে আমার কথা শুনতে হবে। আমার প্রথম কথা, বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করুন।’
মন্তব্য করুন: