প্রকাশিত:
১২ আগষ্ট ২০২৪, ১৭:২৫
পারফরম্যান্সের কারণে জাতীয় দলে কখনোই জায়গা হারাতে হয়নি সাকিব আল হাসানকে। অলরাউন্ডার হিসেবে একটিতে খারাপ হলেও আরেকটি দিয়ে পুষিয়ে দিতেন তিনি। তাই কখনোই জাতীয় দলে জায়গা হারানো নিয়ে ভাবতে হয়নি সাকিবকে। তবে এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে বদলে গেছে দৃশ্যপট।
সদ্য পতন হওয়া সরকারের একজন সংসদ সদস্য ছিলেন সাকিব। ক্রিকেট থেকে অবসর না নিয়েও গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আওয়ামী সরকারের পতনের সাথে সাথে সাকিবও এখন আর আগের পদে নেই। ক্ষমতার পালাবদলে তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়েছে।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নীরব ভূমিকা নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাকিবকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। লাখো লাখো তরুণ ভক্তের জন্য তার কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি ছিল না। দেশে যখন অসংখ্য প্রাণ ঝরে যাচ্ছিল, সাকিব তখন বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার পাশাপাশি পরিবার নিয়ে জম্পেশ সময় কাটাচ্ছিলেন। শুধু তাই নয়, দেশের ক্রান্তিলগ্নে যখন সবাই বুক চিতিয়ে লড়ছে, সাকিব উল্টো প্রশ্ন করেন—দেশের জন্য জনতা কী করেছে? এতে করে সাধারণ জণগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারান সাকিব।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তান সফরের স্কোয়াডে সাকিবকে রাখার বিষয়টি নিয়ে চাপের মধ্যে ছিল নির্বাচক প্যানেল। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সাকিবকে রেখেই ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করে বিসিবি। এরপর সাকিবকে পাকিস্তান সিরিজে নেওয়ার ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। জানালেন পারফরম্যান্স অর্থাৎ মেধা বা যোগ্যতার ভিত্তিতেই সাকিব আল হাসানকে দলে রাখা হয়েছে।
লিপু বলেন, ‘সে (সাকিব) তার পারফরম্যান্সের আলোকেই যাচ্ছে। পারফরম্যান্স দিয়ে সাকিব নিজেকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছে, বিভিন্ন সংস্করণের ক্রিকেট, পাকিস্তানের বিপক্ষে তার রেকর্ড…সবকিছু মিলিয়েই যাচ্ছে।’
শুধু পাকিস্তান সিরিজ নয়, এ বছর বাংলাদেশ দলের ৮টি টেস্টই সাকিব খেলবেন জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে সিরিজের সময় তার কাছে আমরা সংক্ষিপ্ত পরিকল্পনা জানতে চেয়েছিলাম। আমাদের অনেকগুলো টেস্ট ম্যাচ আছে, ডিসেম্বর পর্যন্ত আটটা টেস্ট খেলব। সেখানে সে আমাদের আশ্বস্ত করেছে, সবগুলো টেস্ট খেলবে। প্রত্যেকটা সিরিজের আগে সব অনুশীলন সেশনে থাকবে।’
আন্দোলন নিয়ে সাকিব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টও করেননি। এ প্রসঙ্গে লিপু বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোন খেলোয়াড় কী পোস্ট দিলেন, সেটা নির্বাচনের মানদণ্ড হতে পারে না।’
এদিকে মাঠের ক্রিকেটের বাইরেও সাকিবের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে লিপু বলেন, ‘অবশ্যই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা চিন্তিত। তার নিরাপত্তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের একজন টপ প্লেয়ার। সিলেকশনের ক্ষেত্রে আমরা ভেবেছি, যেহেতু তিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মূলত তার মেধার বিবেচনায় তাকে দলে নেওয়া হয়েছে।’
মন্তব্য করুন: