প্রকাশিত:
২৭ জুলাই ২০২৩, ১৩:২১
শরীর চাঙ্গা রাখতে আমরা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট জাতীয় খাবার ভারসাম্য রেখে খেলেও ফুলে যাই ফাইবারের কথা। রোজের ডায়েটে ফাইবার রাখাও কিন্তু ভীষণ জরুরি। শরীরের পুষ্টি জোগাতে ফাইবারের খুব বেশি ভূমিকা না থাকলেও অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় ফাইবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফল, শাকসব্জি, দানাশস্যে ফাইবার ভরপুর মাত্রায় থাকে। তবে কী ধরনের ফাইবার খাবেন, তা নির্ভর করছে আপনার শরীরের উপর। পেট ভরাতে ও পেট পরিষ্কার করাই ফাইবারের মূল কাজ। শরীরের টক্সিন বার করতেও সাহায্য করে ফাইবার।
কোন কোন খাবারে থাকে?
ফাইবার আসলে দু’রকমের হয়— দ্রাব্য এবং অদ্রাব্য। দ্রাব্য ফাইবার জলের সঙ্গে মিশে জেলের মতো তরল প্রস্তুত করে। ওট্স, বার্লি, আপেল, টকজাতীয় ফল যেমন মুসাম্বি, কমলালেবু, কিউয়ি, ইত্যাদি দ্রাব্য ফাইবারের উৎস। এই প্রকার ফাইবার রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। অন্য দিকে, অদ্রাব্য ফাইবার মূলত পেট পরিষ্কার রাখতে ও হজমে সাহায্য করে। আটা, বাদাম, বীজ, বিভিন্ন ধরনের সব্জি অদ্রাব্য ফাইবারের উৎস। এই প্রকার ফাইবার নিয়মিত ডায়েটে রাখলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্র্যাকে আলসার থাকলে ডায়েটে ফাইবারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্র্যাকে আলসার থাকলে ডায়েটে ফাইবারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
শরীরে রোজ কতটা ফাইবার দরকার?
এক জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের শরীরে রোজ ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম ফাইবার ও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রত্যেক দিন ২০ থেকে ২৫ গ্রাম ফাইবারের প্রয়োজন। তবে ফাইবার খেতে হবে বুঝেশুনে। যেমন, এক কাপ আপেলে ফাইবার থাকে ২-৪ গ্রাম। অন্য দিকে এক কাপ ডালে ফাইবার থাকে ৬-৭ গ্রাম। এ বার সারা দিনের খাদ্যতালিকা ধরে সেই হিসাব করে নিতে হবে। এর জন্য পুষ্টিবিদের সাহায্য নিতে পারেন।
কেন রোজের ডায়েটে ফাইবার রাখা জরুরি?
১) কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, ফিশচুলার মতো সমস্যায় দীর্ঘ দিন ভুগলে ডায়েটে বেশি করে ফাইবার রাখতে হবে।
২) গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্র্যাকে আলসার থাকলে ডায়েটে ফাইবারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদের সাহায্য নিয়ে বেশি ফাইবার খেলে পেটে ব্যথা বা জ্বালা করার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তখন দ্রাব্য ফাইবার খেতে হবে, অদ্রাব্য ফাইবারের মাত্রা কমাতে হবে।
৩) হঠাৎ করে হাই ফাইবার ডায়েট শুরু করা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে পেটে ব্যথা, গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। অল্প অল্প করে ডায়েটে ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
৪) ফাইবার কোলন পরিষ্কার রাখে। এতে কোলন ক্যানসারের আশঙ্কাও কমে।
৫) বেশি ফাইবার খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভরে থাকে। ফলে বাইরের ভাজাভুজি খাওয়ার প্রবণতা কমে। ওজন ঝরানোর ডায়েট শুরু করলেও ডায়েটে ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
৬) অন্ত্রে অনেক ভাল ব্যাক্টেরিয়া থাকে, যা স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়ক। এই ব্যাক্টেরিয়াগুলির খাদ্য জোগায় ফাইবার। অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতেও ফাইবারের ভূমিকা রয়েছে।
৭) ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ডায়েটে বেশি করে ফাইবার রাখা জরুরি।
মন্তব্য করুন: