প্রকাশিত:
২৮ আগষ্ট ২০২৪, ১১:২৩
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে (৩১) ধর্ষণ ও হত্যার বিচার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে (২৭ আগষ্ট) মঙ্গলবার রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন অভিমুখে যাত্রা করেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। জবাবে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় অন্তত ২২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে কর্মসূচি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি। আজ বুধবার রাজ্যজুড়ে ১২ ঘণ্টা ধর্মঘট পালনের ডাক দিয়েছে দলটি। তবে এই আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক’ আখ্যা দিয়ে এর কঠোর সমালোচনা করেছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস।
এর আগে গত সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রসমাজ। এর পরই কলকাতা শহরজুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি করে পুলিশ। (২৭ আগষ্ট) মঙ্গলবার সকাল থেকেই নবান্ন চত্বরে ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। শহরের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয় কনটেইনার।
তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে আন্দোলনকারীদের ভিড়। সাঁতরাগাছিতে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও ছোড়েন। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যান বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে হাওড়া সেতুতেও ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় ‘দফা এক, দাবি এক, মমতার পদত্যাগ’ স্লোগান দিতে শোনা যায় তাঁদের।
পরিস্থিতি সামাল দিতে জলকামান চালানো শুরু করে পুলিশ, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। পুলিশের আক্রমণে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান বিক্ষোভকারীরা। এ সময় নবান্নেই অবস্থান করছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া কলকাতার পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের কাছে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে জলকামান থেকে পানি ছোড়ে পুলিশ। মহাত্মা গান্ধী রোডেও বিক্ষোভকারীদের জলকামান চালিয়ে নিবৃত্ত করে পুলিশ।
আন্দোলনে যোগ দেওয়া নমিত ঘোষ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিপেটা করে।’
বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, অনেক জায়গা থেকে নির্যাতনের খবর আসছে। রাজ্য ও কলকাতা পুলিশকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমন-পীড়ন না চালানোর আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুনাল ঘোষ বলেন, বিজেপির চক্রান্ত ভেস্তে গেছে বলেই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। বুধবার জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে।
এদিকে আটক বিক্ষোভকারীদের ছাড়িয়ে আনতে (২৭ আগষ্ট) বিকেলে লালবাজার ঘেরাও করে বিজেপি। সুকান্ত মজুমদার, রুদ্রনীল ঘোষ ও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা মিছিলের নেতৃত্ব দেন। তবে লালবাজারে পৌঁছানোর আগেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।
মন্তব্য করুন: