প্রকাশিত:
২৮ আগষ্ট ২০২৪, ১৭:১৬
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন ক্যাডার অধিদপ্তর হওয়া সত্ত্বেও নন-ক্যাডার এবং প্রকল্পের মাধ্যমে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের অধৈভাবে ক্যাডারভুক্তকরণ এবং জ্যৈষ্ঠতা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
গত ২৫ আগস্ট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে পদোন্নতিসহ বিভিন্ন বৈষম্য নিরসন ও সংস্কারে বিসিএস পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এর পক্ষ হতে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপদেষ্টা বরাবর সংগঠনটির সভাপতি বিলকিস আকতার ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইবনে মায়াজ প্রামানিক স্বাক্ষরিক এক স্মারকলিপি প্রদান করেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের ৬৮৫ ও ৬৮৬ নং স্মারকে ৬৩ জন এবং ২০২৪ সালের ১৮ এপ্রিল ২৮২ নং স্মারক মূলে ১ জন কর্মকর্তাকে ৫ম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। মোট ৬৪ জনের জনের মধ্যে ২৮ জনই প্রভাবশালী ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের আত্মীয় স্বজন। যাদেরকে প্রকল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। ২০ জন ২৯ তম বিসিএসে নন- ক্যাডারে যোগদানকৃত; যারা ২০২২ সালের ১৫ জুন ৯০ জনের সাথে ক্যাডারভুক্ত হন। ক্যাডার কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করে তাদেরকে ক্যাডারভূক্তির মাত্র ৪ মাসের মধ্যেই ৫ম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। উক্ত অনিয়মের বিষয়ে তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সচিব খায়রুল ইসলাম, অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের তৎকালীন সরকারের মদদপুষ্ট কর্মকর্তাদের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পিএসসি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে বিসিএস নিয়োগবিধি সংশোধন না করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শুধু ক্যাডার পদ বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনকে পুঁজি করে উক্ত কর্মকর্তাদের রাজস্ব খাতে ক্যাডারভুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, ৯০ জন সহকারী প্রকৌশলীকে যোগদানের তারিখ হতে অবৈধভাবে ক্যাডারভুক্ত করে ক্যাডার পদে স্থায়ী না করে এবং সিনিয়র স্কেল পরীক্ষা ছাড়াই ৫ম গ্রেডের ক্যাডার পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। এতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিনিয়র ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও হতাশা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ অনুযায়ী সহকারী প্রকৌশলী হতে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির জন্য ৭ বছরের অভিজ্ঞতার বিধান থাকলেও ৩১তম ও ৩২ তম বিসিএস (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল) ক্যাডার ১০ জন সহকারী প্রকৌশলী পদে সাত বছর পূর্ণ করে ৩ বার পদোন্নতির জন্য আবেদন করেও তাঁরা পদোন্নতি বঞ্চিত হন। তাঁরা সকল যোগ্যতা সম্পন্ন করে ২০১৮ ও ২০২১ সালে ৬ষ্ট গ্রেডে পদোন্নতির জন্য একাধিকবার আবেদন করলেও তাঁদেরকে বঞ্চিত করা হয়।
বিসিএস (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল) ক্যাডারের ১৫টি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর মধ্যে ১৪টি পদই শূণ্য। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং) অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা এবং ৫ বছরের নির্বাহী প্রকৌশলীর অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। ২০২৪ সালের ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশল পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন পূর্বক ২৮ তম ও ৩০ তম বিসিএসের কর্মকর্তাগণ আবেদন করেন। আবেদকারী কর্মকর্তাগণ প্রত্যেকেই ক্যাডারের চাকুরিতে স্থায়ী, সিনিয়র স্কেল পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ এবং পদোন্নতির সকল যোগ্যতা অর্জন করা সত্ত্বেও রহস্যজনকভাবে তাদের পদোন্নতির আবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ না করে একটি স্বাথনৈষী মহল থেকে এনক্যাডারকৃত ১৩ জন কর্মকর্তা যারা সিনিয়র স্কেল পদোন্নতি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই তাদেরকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে পদোন্নতির জন্য অপচেষ্টা করছেন এবং সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রকাশ্যে অনৈতিকভাবে চাপ প্রদান করছেন।
অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর একটি ক্যাডার বিভাগ। কিন্তু ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদগুলো নন-ক্যাডার কর্মকর্তাগণ দখলে রেখে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ক্যাডারদের বঞ্চিত করছেন।
এতে তাঁরা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে জানান।
মন্তব্য করুন: