শুক্রবার, ২রা মে ২০২৫, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন চুক্তি না করার আহ্বান
  • সবার আগে বাংলাদেশ, এটিই হবে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য
  • হাসিনার বক্তব্যের ফরেনসিক প্রতিবেদন উপস্থাপন
  • ঢাকাসহ ৮ জেলায় বজ্রপাতের সতর্কতা জারি
  • শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়
  • শ্রমিকদের ৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ
  • ‘শ্রমিক-মালিকদের যৌথ প্রচেষ্টাই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে’
  • মালিক-শ্রমিক এক কাতারে দাঁড়ালেই সমাজের চিত্র বদলে যাবে
  • জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেলো বরিশালের আমড়া
  • বায়ুদূষণে আজ শীর্ষে ঢাকা, বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’

ইউপি সদস্যের অপরিকল্পিত ঘেরে বিদ্যালয়ের চারদিকে পানি

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:০২

জলাবদ্ধতায় বিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ যাতায়াতের রাস্তা গেছে তলিয়ে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ভবনের শ্রেণিকক্ষগুলোতে লাগানো হয়েছে তালা।

শিশুদের পাঠদান অব্যাহত রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন জরাজীর্ণ টিনশেড ভবন।

এমন চিত্র দেখা গেছে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ৬২ নম্বর পশ্চিম সিড্ড্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য রুবেল আকনের অপরিকল্পিত মাছের ঘেরকে দায়ী করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, চারদিকে শুধু পানি আর পানি, মাঝখানে দাঁড়িয়ে দোতলা স্কুল ভবন। ভবনের কক্ষগুলো তালাবদ্ধ। মাঠে মধ্যে কোমর সমান পানি। একমাত্র যাতায়াতের রাস্তাটিও পানিতে নিমজ্জিত।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের তিন দিকের বিশাল আকারের মাছের ঘের স্থানীয় ইউপি সদস্য রুবেল আকনের। কিন্তু পানি নামার কোনো ব্যবস্থা রাখেননি। এতে সামান্য বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ের চারপাশ পানিতে তলিয়ে যায়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহদী আমিন বলেছে, আমাদের বিদ্যালয়ে পানি হওয়ায় এখানে আসতে ভয় পাই। এখানে অনেক পানি। আমরা অনেকেই সাঁতার জানি না বিধায় এখানে আসি না। তাই ক্লাসও করতে পারি না।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তোয়া মনি বলেছে, আমাদের এ মাঠে আগে আমরা খেলতাম। এখন পানির কারণে খেলতেও পারি না, ক্লাসও করতে পারি না। আমরা এখানে খেলতে চাই, নিয়মিত ক্লাস করতে চাই।

বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক লিজা বেগম বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে আমরা একটি সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তা হলো আমাদের স্কুলের নতুন ভবন প্রজেক্ট (মাছের ঘের) ও বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধ হয়ে আছে। আমাদের ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে খুবই সমস্যা হচ্ছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাজনিত কারণে পুরোনো ভবনে ক্লাস নিতে হচ্ছে। এখানে শ্রেণিকক্ষ কম থাকায় একটি কক্ষের মধ্যে তিন শ্রেণির ক্লাস নিতে হচ্ছে। যার ফলে শিশুদের পড়া বোঝা ও শোনায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমরা এর সমাধান চাই।

আমিনুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, অনিরাপদ পরিবেশে আমরা কীভাবে বাচ্চাদের পাঠাব? জলাবদ্ধতার কারণে বাচ্চারা পড়ে গেলে বই নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া অল্প বৃষ্টিতেই মাঠে পানি জমে যাওয়ায় স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয়। এতে শিশুদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। অনেক শিশু সাঁতার জানে না। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নার্গিস পারভীন বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে আমি শিক্ষার্থীদের নিয়ে সুন্দরভাবে পাঠদান করতে পারছি না। নতুন ভবনের প্রায় চারদিকেই পানি। বিদ্যালয়ে আসতে হলে পানিতে ভিজে আসতে হয়। শিশুরা পানিতে পড়ে যেতে পারে । তাছাড়া মাঠে যে পরিমাণ পানি, সেখানে বিষাক্ত সাপ, পোকামাকড় থাকাটাও স্বাভাবিক। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনে ক্লাস নিচ্ছি। ইউপি সদস্য রুবেল আকনের মাছের ঘেরের জন্য এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা আমাদের খরচে একটা পাইপ দিয়েছিলাম, এখন সেটির মুখও বন্ধ হয়ে গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য মুঠোফোনে বলেন, আমার মাছের ঘেরের জন্য পানি আটকে থাকে না। আমাদের ওই এলাকাটা এমনিতেই একটু নিচু। বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। অন্যদিকে আশপাশে পানি নামার কোনো নালা নেই। আমি এখন অসুস্থ। সুস্থ হয়ে এ বিষয়ে স্থায়ীভাবে সমাধান করব।

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ক্লাস্টার প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমরা জেনেছি। অতি দ্রুত সমাধান হবে বলে আসা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন বেগম সেতু বলেন, বিষয়টি আমি আপনাদের কাছ থেকেই জানতে পারলাম। যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর