রবিবার, ২৪শে নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • প্রয়োজনে ভেঙে ফেলা হবে হাওরের সড়ক
  • পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, মামলার প্রস্তুতি
  • ৩ মাসে জ্বালানি খাতে ৩৭০ কোটি টাকা সাশ্রয়
  • বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই
  • নতুন সিইসি ও ইসিদের শপথ কখন জানা গেল
  • ঢাকার বাতাস আজ ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, বেশি দূষণ যেখানে
  • এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া
  • নাসির উদ্দীনকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন
  • আমরা এক পরিবার, কেউ কারো শত্রু হবো না
  • শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

ডিলার নিয়োগের আবেদন ফি না থাকলেও আদায় ৭ লাখ

মো. সাইফুল ইসলাম, চরফ্যাসন (ভোলা)

প্রকাশিত:
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৬

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী পরিচালনার জন্য ডিলার নিয়োগের নামে আবেদন প্রতি দুই হাজার টাকা নিয়েছেন ভোলার চরফ্যাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক। খাদ্য-শস্য লাইসেন্স ও স্ট্যাম্প বাবত দুই হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। খাদ্য-শস্য লাইসেন্সের নমুনা কপি দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেনি। তবে, খদ্যবান্ধব কর্মসূচী পরিচালনার জন্য ডিলার নিয়োগের আবেদন জমা থেকে শুরু করে যাচাই-বাচাই করা পর্যন্ত কোন ধরনের সরকারি ফি নির্ধারণ করা হয়নি। এমনকি খাদ্য-শস্য লাইসেন্স এর প্রয়োজন নাই। এমনটাই জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক।

চরফ্যাসন উপজেলাধীন ২১টি ইউনিয়ন থেকে ৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩৫৩টি আবেদন জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক। তবে একাধিক অবেদনকারী বলেছেন আট শতাধিক আবেদনপত্র জমা পড়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে কার্যলয়ে গিয়ে ডিলার আবেদন রেজিস্ট্রার বহি দেখতে চাইলে দেখানো যাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নির্বাচিত ডিলার ব্যতিত অন্য আবেদনকারীদের থেকে আদায়কৃত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, 'তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।'

এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১৯ আগস্ট, ২০২৪ ইং তারিখের ১৫৫ নং স্মারকের নির্দেশনা অনুযায়ী চরফ্যাসন উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও বিক্রয় কেন্দ্রের অনুকূলে খদ্যবান্ধব কর্মসূচী পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে ডিলার নিয়োগ করা হবে মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে চরফ্যাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আবেদনকারী জানান, গণহারে আবেদন জমা নিয়েছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। শতকরা ৯৫ শতাংশ আবেদনকারীর ট্রেডলাইসেন্স ভুয়া এবং আবেদনপত্রে দেওয়া তথ্য সঠিক নয়। অনেকের দোকান ও গুদামঘর নাই। এমনকি আর্থিক সচ্ছলতার সনদও জাল।

চরফ্যাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, 'আবেদন প্রতি ২ হাজার টাকা নিয়েছি। এটা মূলতঃ ১ হাজার ৫০০ টাকা খাদ্য-শস্য লাইসেন্স বাবত ও ৫০০ টাকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের জন্য নেওয়া হয়েছে। নির্বাচিত ডিলারগণকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে লাইসেন্স দেওয়া হবে। অনেক আবেদনকারীর আবেদনের সাথে সংযুক্ত ট্রেডলাইসেন্স ও নাগরিকত্ব সনদ ৫ আগস্টের পরের তারিখে ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক সীলমোহরসহ সই করা। প্রাথমিকভাবে বুঝা যাচ্ছে সীলমোহর ও সই কপি করা হয়েছে। এজন্য সেগুলো বাতিল করা হবে।'

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চরফ্যাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক এর তথ্যমতে ৩৫৩টি আবেদন ২ হাজার টাকা করে হলে তাতে ৭ লক্ষ ৬ হাজার টাকা জমা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক মুঠোফোন বলেন, 'খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী পরিচালনার জন্য ডিলার নিয়োগের আবেদন থেকে শুরু করে যাচাই-বাচাই করা পর্যন্ত কোন ধরনের সরকারি ফি নির্ধারণ করা হয়নি। এমনকি খাদ্য-শস্য লাইসেন্স এর প্রয়োজন নাই। তবে কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত ডিলারগণ ২০ হাজার টাকা জামানত হিসাবে পে-অর্ডার আকারে তিনশত টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গিকারনামা দিতে হবে।'

চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নওরীন হক মুঠোফোন বলেন, 'চরফ্যাসন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু বকর সিদ্দিক একজন সৎ অফিসার। তিনি যেটা বলেছেন সেটা সঠিক।'

বরিশাল আঞ্চলিক রক্ষনাবেক্ষণ কর্মকর্তা আবদুল মন্নান বলেন, 'ডিলার আবেদন করতে কোন ফি এর প্রয়োজন নেই। যারা খাদ্য-শস্য ব্যবসায়ী তাদের ফুড গ্রেড লাইসেন্স নিতে হয়। লাইসেন্স ফি কত আমার জানা নাই। তবে লাইসেন্স ফি ব্যাংক চালান এর মাধ্যমে জমা দিতে হবে। নগদ টাকা নেওয়া বেআইনি। যদি কোন আবেদনকরীর থেকে লাইসেন্স ফি বাবদ নগদ টাকা নিয়ে থাকে তাহলে ব্যাংকের জমা স্লিপ দিতে হবে। অন্যথায় সরকারি কোষাগারে টাকা জমা হবে না।'


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর