প্রকাশিত:
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪
সহিংস সংঘর্ষের জেরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে । সহিংসতা নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজ্যের তিনটি জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। তবে কারফিউ উপেক্ষা করেই চলছে বিক্ষোভ।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব এবং থৌবল জেলায় (১০সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে সর্বাত্মক কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যের শান্তি পুনরুদ্ধারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের এক দিন পরই মণিপুরের এই তিন জেলায় কারফিউ জারি করা হলো।
এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় (১০সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার দুপুর ৩টা থেকে আগামী পাঁচ দিনের জন্য (১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টা পর্যন্ত) সমগ্র রাজ্যে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল এক নির্দেশিকা জারি করে এ কথা জানিয়েছে মণিপুর সরকার। অশান্তির আবহে সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছিল বলে নির্দেশিকায় জানিয়েছে সরকার।
অন্যদিকে মণিপুর সরকারের ডিজিপি এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবিতে কারফিউ উপেক্ষা করে গতকাল নারী ও শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীরা ইম্ফলের রাজভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত সোমবার খোয়াইরামবন্দ ওমেন মার্কেটে অবস্থানরত কয়েক শ শিক্ষার্থী বিটি রোড ধরে রাজভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কংগ্রেস ভবনের কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে পিছু হটে তারা। স্থানীয় সময় রবিবার রাতেও বিপুলসংখ্যক নারী ইম্ফলে রাস্তায় নামেন। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
চলতি মাসে নতুন করে উতপ্ত হয়েছে মণিপুরের পরিস্থিতি।
গত কয়েক দিনে দফায় দফায় গুলিবিনিময়, বোমা বিস্ফোরণ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা, বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টাসহ একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। সাম্প্রতিক এই সহিংস ঘটনাগুলোতে অন্তত আটজন প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২ জনেরও বেশি মানুষ।
আদেশ অনুযায়ী, কারফিউ চলাকালীন বাসিন্দাদের তাদের বাসস্থানের বাইরে চলাচলের ওপর কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় সময় ১০ সেপ্টেম্বর ভোর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সকাল ১১টা থেকে তা আবার কঠোরভাবে কার্যকর করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন: