প্রকাশিত:
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:২৮
আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি পর্যালোচনার শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি পর্যালোচনাপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি নিয়ে আজকে ছয়জন উপদেষ্টাকে নিয়ে একটি জরুরি সভা করেছি। সেখানে বেশি কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে কেবিনেট মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল একটি পর্যালোচনা কমিটি বা পর্যবেক্ষণ কমিটি করবো। আসলে শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে যে কমিটিগুলো আছে, সেগুলো বিভিন্ন কারণে বিগত সরকারের আমলে শ্রম অধিদপ্তর ও শ্রম আদালতের ওপর শ্রমিকরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। সেটা ফরিয়ে আনতে হবে কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে। সেটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া।
তিনি বলেন, আপাতত শ্রমিকরা যে সমস্যাগুলো ফেস করছেন, তাদের দাবিগুলো যাতে নিদিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ফেস করতে পারেন সে লক্ষ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ ও শ্রম পরিস্থিতির বিদ্যমান সমস্যা পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ দেওয়ার জন্য, শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে শ্রম অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক এবং শ্রম অধিদপ্তরের ট্রেড ইউনিয়ন ও সালিশির পরিচালককে সদস্য সচিব করে এ কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে তিন জন শ্রমিক নেতা, দুইজন সুপ্রিমকোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী এবং মালিক পক্ষের দুইজন সদস্য আছেন।
তিনি বলেন, আমাদের যে শ্রম ভবন আছে বিজয় নগরে সেখানে শ্রমিকরা তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া পেশ করতে পারবেন। কমিটি পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থার কাছে পাঠাবে। শ্রমিকদের যে ন্যায্য দাবিগুলো আছে সেগুলোর মধ্যে যেটা স্বল্প মেয়াদে বা দ্রুত সমাধানযোগ্য সেটা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, আজকে উপদেষ্টাদের নিয়ে জরুরি সভায় কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো: শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা অবিলম্বে পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মন্ত্রণালয়, শ্রম অধিদপ্তর, কলকারখানাও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে এবং যথাসম্ভবে মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করে সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান কমিটিসমূহ পুনর্গঠনপূর্বক হালনাগাদ করতে হবে।
শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটির কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে এবং শ্রম অসন্তোষ সংক্রান্ত শুনানির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিনের মাঠ পর্যায়ের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে শ্রম অসন্তোষ নিরসন কমিটি করে স্থানীয় সমস্যা সৃষ্টির প্রাক্কালে/ সৃষ্টির পর কালবিলম্ব না করে সমাধান করতে হবে। এছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ করতে হবে এবং এ সংক্রান্ত সরকারি আর্থিক ঋণ/ প্রণোদনার ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে। ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে হবে।
তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ছয়টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আন্তঃসমন্বয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা এখানে কোনো গ্যাপ রাখতে চাচ্ছি না। সচিব পর্যায় থেকে সবাইকে সমন্বয় রাখবেন। যাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং সমাধানের দিকে যেতে পারি। তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি।
মন্তব্য করুন: